বাইশারীতে ৭ বছরেও পরিশোধ করেনি মৃত ইউপি সচিবের ভাতা
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব নূরুল আমিন মারা গেছেন ২০১৪ সালেল ১২ জানুয়ারি। তিনি এ পরিষদেই ২৯ বছর ধরে চাকরী করেছেন। কর্মরত অবস্থাতেই মারা যান তিনি। বিধি মতে তিনি ইউপি অংশের প্রায় ৬ লক্ষ টাকা (৫০ শতাংশের) আনুতোষিক ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও ২০১৭ সালে ৫০ হাজার টাকার একটি মাত্র কিস্তি পান তিনি। বাকী টাকা দিচ্ছেন না পরিষদ চেয়ারম্যান। তালবাহানা করছেন তিনি। আর এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকে একে একে ৪ বার এ টাকা পরিশোধে নির্দেশ সম্বলিত চিঠি পাঠানো হলেও কর্ণপাত করছেন না এ চেয়ারম্যান। ফলে পরিবারের একমাত্র আয়ক্ষম ব্যক্তি মারা যাওয়ার প্রায় ৭ বছরেও এ টাকা পাননি নুরুল আমিনের পরিবার। ফলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা।
পরিবারের বড় ছেলে শাহ মো. ফখরুদ্দীন বলেন, তার বাবা চাকুরী জীবন শুরু করেন বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব দিয়ে। আর এ অবস্থায় বিগত ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায় কর্মরত অবস্থায় ইউপি ভবনের নিজ চেয়ারেই ঢলে পড়েন। মারা যান। ২৯ বছর ধরে সফলতার সাথে চাকুরীও করেন এই একই পরিষদে। ৩ কন্যা ও ১ ছেলে সন্তানকে নিয়ে তার মা পাড়ি দেন অজানা গন্তব্যে। সে নিজেও বেকার। সে নিজে আর তার ছোট বোন অবিবাহিত। তার খুবই অসুস্থ। মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তাদের পরিবার।
তিনি আরও জানান, এমতাবস্থায় তিনি তার মায়ের নিের্দশে বাবার আবুতোষিক ভাতা পেতে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে শুরু করেন দৌড়ঝাঁপ। পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানী শুরুতে ৫০ হাজার টাকার একটি কিস্তি প্রদান করলেও বাকী সোয়া ৫ লক্ষ টাকা অদ্যবদি প্রদান করেন নি। আজ ২০২০ সাল শেষের দিকে। এরই মধ্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান সাহেবকে কঠোর ভাষায় নির্দেশ দেয়া হলেও ওনি কর্ণপাতও করেন না এ নির্দেশনা। ওনার দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে চেয়ারম্যান সাহেব তাকে বাঁকা চোখে দেখেন। উপায়ন্তর হয়ে তিনি গণমাধ্যমের আশ্রয় নিয়েছেন। এতেও কাজ না হলে বিজ্ঞ কোর্ট ছাড়া উপায় নেই তাদের।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, বাইশারী চেয়ারম্যানকে অনেকবার বলা হয়েছে। তিনি এ ভাতা দিচেছন না নানা অজুহাতে। বিশেষ করে ফান্ডে টাকা নেই বলে বাববার বলেছেন তিনি। তবুও এ বিষয়ে আবারও উদ্যোগ নেবেন তিনি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক কাযার্লয়ের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী পরিচালক মো. শফিউল আলম বলেন, বিষয়টি অমানবিক। তিনি বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অনেকবার তাগাদা দিয়েছেন। নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন তিনি। আরেকবার দেখে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম কোম্পানী বলেন, এ টাকা আগের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মনুর আমলের। তবুও তিনি ৫০ হাজার করে ২ কিস্তিতে ১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। লকডাউন হওয়ার কারণে গত ক’মাস টাকা দেননি তিনি। এখন আবারও ৫০ হাজার টাকা দেবেন।