বাইশারী প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী- ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ৫দিন পর্যন্ত মিনি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে হিল লাইন নামক মিনি বাস মালিক সমিতি। এতে করে চরম দূর্ভোগে পড়েছে ওই সড়কে চলাচলকারী তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।
হিল লাইন মিনি বাস মালিক সমিতির অভিযোগ রাস্তা খারাপ, প্রতি দিন গাড়ি চালিয়ে লাভবান হওয়া তো দুরের কথা লুকসান গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এছাড়া ঈদগাঁও পালপাড়া নামক স্থানে রাস্তার মেরামতের কাজ হওয়ায় সরাসরি গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
মালিক সমিতির আরও অভিযোগ, বিকল্প রাস্তা তৈরি না করে এধরনের হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় মাঝ পথ থেকে গাড়িতে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে নিরুপায় হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানান মিনি বাস মালিক সমিতির বাইশারীতে দায়িত্বরত কাউন্টার ম্যানেজার মো. সেলিম।
গাড়ি বন্ধের কারণে এখন অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছে ঈদগড়-বাইশারী ও গর্জনিয়া ইউনিয়নের লক্ষাধীক মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বাস বন্ধ করে দেওয়ার ফলে এখন মনে হচ্ছে তিন ইউনিয়নে অঘোষিত হরতাল পালন করছে মালিক সমিতির সদস্যরা। বর্তমানে বাস চলাচল না থাকায় তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ উপায় না পেয়ে সিএনজি ট্যাক্সি, টমটম, মটর সাইকেল ও রিক্সা ভ্যান নিয়ে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে বাধ্য হয়েছে।
জানা যায়, গত ৫মার্চ সকাল থেকে মিনি বাস বন্ধ থাকার কারণে এ পাহাড়ি পথ দিয়ে ক্ষুদ্র যানবাহন নিয়ে ঝুকি ও নিরাপত্তাহীনতায় চলাচল করছে অত্র এলাকার লোকজন। এ অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম বলেন, তিনিও জানেন না কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিনি বাস মালিক সমিতি।
সরজমিনে বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক ঘুরে দেখা যায় ২৫ কিলোমিটারের অধিক সড়ক ভেঙ্গে খান খন্দ, বিশাল বিশাল গর্ত, কালভার্টগুলো মাঝখানে ফাটল এবং মাঝে মধ্যে রাস্তা পাহাড়ি ছড়ায় রূপ ধারণ করেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে ওই সড়ক মেরামত না হলে সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যাবে। বর্তমানে শুকনো মৌসুমে কোন রকম এসব খান খন্দ ও গর্তের মধ্যদিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।
সরজমিনে আরও দেখা যায়, ঈদগাঁও স্টেশন থেকে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে। তবে বিকল্প কোন রাস্তা ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তৈরি না করায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তাছাড়া হিল লাইন মিনি বাস মালিক মৌলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের সরাসরি গাড়ি চালাতে না পারায় অর্ধেক পথ থেকে যাত্রী না পাওয়ার কারণে এবং মেরামত কালীন বিকল্প রাস্তা না থাকায় আপাতত গাড়ি বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে প্রথমত গাড়ির ক্ষতি দ্বিতীয়ত চালক ও গাড়ির তেল খরচ উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। যারফলে তাদের গাড়ি বন্ধ করা ছাড়া আর উপায় ছিলনা।
এ বিষয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আবু মুছা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তার কাছে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং কোন ধরণের অভিযোগ আসেনি। তারপরেও তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন।
বাইশারী বাজার সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর বলেন, মালিক সমিতির এ ধরণের সিদ্ধান্তে তিনি হতভম্ব। তিনি বিষয়টি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামালকে অবহিত করেছেন।