বাঘাইছড়িতে আধাপাকা ধান কাটছে কৃষকেরা
আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বোরো ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আধাপাকা ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বর্ষণে ইতিমধ্যে ৬২৫ একর বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবছর ২৪টি ব্লকে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাত হাজার ৬৬৬ একর। এর মধ্যে সাত হাজার ৩২৫ একর বোরো আবাদ করা হয়। তবে কাপ্তাই লেকের পানি দেরিতে নেমে যাওয়ায় ৩৪১ একর আবাদ করা সম্ভব হয়নি। গত ৫মে থেকে টানা বর্ষণে ভারতের ত্রিপুরা ও সাজেক থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ইতিমধ্যে ৬২৫ একর বোরো ক্ষেত ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কাঁচা ও আধাপাকা বোরো ক্ষেত বেশি বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উগলছড়ি, লাল্যাঘোনা, উলুছড়ি, শিজক, খেদারমারা, সারোয়াতলী, পাবলাখালী, আমতলী, মাস্টার পাড়া ও পুরান মারিশ্যা এলাকায় শত শত কৃষক আধাপাকা ধান কেটে ফেলেছেন।
কৃষকরা জানান, গত কয়েক দিন বর্ষণে শত শত একর কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বোরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। আরও প্রায় দুই হাজার একর সামান্য বৃষ্টি হলে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন বোরো ক্ষেত কাটলে ৪০ শতাংশ হলেও পাওয়া যাবে।
শিলকাটাছড়া গ্রামে কৃষক বিজয় কৃষ্ণ চাকমা বলেন, আমাদের কাঁচা ও আাধাপাকা এক একর ধান তলিয়ে গেছে। এখন তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অর্ধডুবিত বোরো ক্ষেতের ধান কাটা শুরু করেছি। এখন কাটলে কিছু হলেও পাওয়া যাবে। মাষ্টার পাড়া গ্রামের মো. লোকমান বলেন, ভারী বর্ষণে ইতিমধ্যে অনেক বোরো ক্ষেত ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আবার দুই হাজার একরের বেশি বোরো ক্ষেত অর্ধডুবিত অবস্থায় রয়েছে। সেগুলো যে কোনো মুহুর্তে তলিয়ে যাবে। সেজন্য অনেক কৃষক আধাপাকা অবস্থায় ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুরেশ্বর চাকমা বলেন, কাচালং ও শিজক নদীর পানি কমে আসলেও বোরো ক্ষেত এলাকায় পানি বাড়ছে। কিছু এলাকায় বোরো ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। সামনে বৃষ্টি হলে দুই হাজার একরের বেশি অর্ধডুবন্ত অবস্থায় থাকা বোরো ক্ষেত তলিয়ে যাবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, টানা বর্ষণে ৬শ একরের বেশি তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া বোরো ক্ষেত কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানি সরে না গেলে বলা যাবে না। তবে বৃষ্টি না হলে পানি সরে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী বলেন,গত কয়েক দিন বর্ষণে উপজেলায় ব্যাপক বোরো খেত তলিয়ে গেছে। ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ করে আমাদের তথ্য দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।