বাঘাইছড়িতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ২ ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ৪ নংওয়াডের করেঙ্গাতুলী বড়ুয়া পাড়া এলাকায় চাকমা সম্প্রদায়ের এক কলেজ ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বঙ্গলতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি যীশু চৌধুরী (২৭) ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া সোহেল (২৬) সহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে বাঘাইছড়ি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে । ধর্ষণে অভিযুক্ত বাকি তিন আসামি হচ্ছে একই এলাকার আরিফ (২৬), রাসেল (২৯), অমল বড়ুয়া (৪৫)। এদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টায় ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীর পিতা এই মামলাটি দায়ের করেন, মামলা নম্বর -১।
বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বাঘাইছড়ি থানা পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থলে অভিযান চালিয়েছে, এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি। আর আগামীকাল সকালে ভিকটিমকে প্রয়োজনীয় ডাক্তারী পরীক্ষার আওতায় আনা হবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় ধর্ষিত ছাত্রীর বয়স ২১ বছর। সে কাচালং সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় এবছর উত্তীর্ণ হয় । পূর্ব পরিচয়ের সূত্রের জের ধরে গত ১৫/০৭/২০২২ খ্রি. তারিখ রাত অনুমানিক ৯টার দিকে ০১ নং বিবাদী বিপ্লব বড়ুয়া মেয়েটিকে জরুরি আলাপ আছে বলে বাড়ির বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর মেয়েটি রাত্রে বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন আশেপাশে খোঁজাখুজি করেন । পরদিন ১৬/০৭/২০২২ খ্রি. তারিখ ভোর বেলায় মেয়েটি বাড়িতে এসে জানায় যে, উল্লেখিত ০১নং বিবাদী বিপ্লব বড়ুয়া তাকে বাড়ির বাহিরে ডেকে নেওয়ার পর উপরোক্ত সকল বিবাদীগণ তাহার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বড়ুয়া পাড়ায় বসতঘরে নিয়ে যায়। তথায় সকল বিবাদীগণ সারারাত ব্যাপি মেয়েটিকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টার কারণে থানায় অভিযোগ দিতে বিলম্ব হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে করেঙ্গাতুলী ও সাজেক এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে পাহাড়ের তিন সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ। দুপুরে মিছিল ও মানববন্ধন করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে তড়িঘড়ি করে ছাত্র লীগের দুই নেতাকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১৭ এর (খ) দ্বারা মোতাবেক ছাত্রলীগ’ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয় এবং সেই সাথে কিশোর ধর’কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মো. জনি খানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব প্রদান করা হয় । উপজেলা ছাত্র লীগের আহব্বায়ক সানি দেব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনার শোনার পর থেকে বিষয়টির প্রতি আমি নজর রাখছি, আশা করি শীঘ্রই সকল আসামি ধরা পরবে।