‘বান্দরবানকে কিভাবে শান্তিতে ফিরিয়ে আনা যায় সেদিকে আগাচ্ছি: জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, পাহাড়ে সকলেই যেনো মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারি, এজন্য সবাইকে এক কাতারে আনার চেষ্টা করছি। যেহেতু সমস্যা সৃষ্টি হয়ে গেছে সেটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার সম্ভব। তাই সকলের মতামত নিয়ে কিভাবে আগের মত সম্প্রীতির বান্দরবানকে শান্তিতে আনা যায় সেই দিকে আগাচ্ছি।
সোমবার (২৯ মে) অরুণ সারকী টাউন হলে পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা সভাপতিত্বে বান্দরবান জেলা বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সামাজিক সংগঠন, ছাত্র সমাজসহ ১২টি সম্প্রদায়ের জাতিসত্ত্বা অংশ নেন।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, এক সময় বান্দরবানকে সম্প্রীতি বান্দরবান বলে আখ্যা দিত। মানুষের মুখে মুখে সম্প্রীতি বান্দরবান মুখরিত হয়ে উঠত। বর্তমানে সেই সম্প্রীতি আর থাকল না। সবুজ পাহাড়ের আড়ালে লাল রক্তের দাগ বয়ে চলেছে ঝিরি ঝরণার পানিতে। তাদের এই আন্দোলনের কারণে আজ শত শত পাড়াবাসী গ্রাম ছাড়া হয়েছে। অসংখ্য ছেলে-মেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে কিছু সশস্ত্র সংগঠন তাদের তাণ্ডবের কারণে আজ ভাই ভাইয়ের মারামারি আর স্ত্রী হারাচ্ছে তার স্বামীকে, এতিম হচ্ছে শিশু-পরিবার। তাছাড়া সন্ত্রাস নির্মূল করতে গিয়ে সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণ মারা যাচ্ছে। এগুলো কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাই পাহাড়ের শান্তির ফিরাতে সবাইকে পাশে থাকা আহ্ববান জানান তিনি।
বক্তারা বলেন, কুকি-চীনের দাবিগুলো তুলে ধরে যে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তা অযৌক্তিক। যার কারণে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বসবাসরত স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের মাঝে জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। যেখানে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে সমাধানেরও পথ আছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে না যেয়ে দুই পক্ষকে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের পথ অবলম্বন করা শ্রেয়। তাহলে এই অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে।
সভায় রোয়াংছড়ি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তারাছা মৌজার হেডম্যান হ্লা থোয়াই হ্রী মারমা’র সঞ্চালনায় ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি রাংলাই ম্রো, সহ-সভাপতি খামলাই ম্রো, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি এডভোকেট খুশিরায় ত্রিপুরা, পাংখোয়া প্রতিনিধি রেডা, কে রেমা, বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বম, খুমি সম্প্রদায়ের সভাপরি লেলুং খুমি, জেলা পরিষদে সদস্য ক্যনে ওয়াং চাক, ছাত্র প্রতিনিধি ম্রাসা খেয়াং, বাংলাদেশ তংচঙ্গ্যা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়ন তংচঙ্গ্যা, প্রথম আলো সিনিয়র সাংবাদিক বুদ্ধজ্যেতি চাকমাসহ ১২টি জাতিগোষ্ঠির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।