বান্দরবানের দুটি উপজেলায় নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটক যাতায়াত নিষিদ্ধ করল প্রশাসন

fec-image

বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংডছড়ি উপজেলায় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় পর্যটক যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) থেকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে সীমান্ত সংলগ্ন এ দুটি উপজেলায়। তবে কবে নাগাদ এই নির্দেশনা প্রত‍্যাহার করা হবে এ বিষয়ে এখনও প্রশাসন থেকে কিছু জানানো হয়নি।

বান্দরবানের মাইক্রোবাস ও মাহেন্দ্র মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরুল আলম জানান, দুটি উপজেলায় পর্যটকবাহী গাড়িগুলোর যাতায়াত বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা পাওয়া পর বন্ধ করার সিদ্ধন্ত দেয়া হয়েছে।

বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি সীমান্ত এলাকায় এখনো সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। অভিযানের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র‍্যাব সদস‍্যরাও অংশ নিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে সেখানকার পাড়াগুলোতে। প্রতিদিনই সেখানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান হয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো উড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত ১২ অক্টোবর সমতল এলাকা থেকে পাহাড়ি অঞ্চলে আসা জঙ্গিদের শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তরের কথা বলে যে প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছিল র‍্যাবের পক্ষ থেকে এ সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখনও কোন জঙ্গি বা সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করেনি বলে জানা গেছে।

স্থানীয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিরা সেখানে রয়েছে এমন খবর পাওয়ার পর র‍্যাবের পক্ষ থেকে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে প্রচারপত্র বিলি করা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ার পর কোন জঙ্গি বা সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ না করায় সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান আরো জোরদার করা হয়েছে।বিশেষ করে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি সীমান্ত এলাকায় শিপ্পী পাহাড়, রনিন পাড়া, সাইজাম পাড়াসহ কেউক্রাডং পাহাড়ের আশেপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাপক অভিযান চলছে।

বান্দরবানের রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন শিবলী ও রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, এ দুটি উপজেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে আপাতত পর্যটক যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পর্যটকদের সাথে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এ কারণেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কখন থেকে আবার এ দুটি উপজেলায় পর্যটক যাতায়াত চালু হবে এ বিষয়েও তারা কোন কিছু জানাতে পারেননি।

র‍্যাব কর্মকর্তারা বলেন, কোন একটি পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠনের সাথে জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন খবর পাওয়া গেছে। তবে এ জন‍্য কেএনএফ (কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সশস্ত্র সংগঠনের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল যাচ্ছে। সম্প্রতি অভিযানে এসব এলাকায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট এর কয়েকটি আস্তানা গোলাবর্শন করে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সমতল এলাকার জঙ্গিরা পাহাড়ি এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রশ্রয়ে থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এমন খবরে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাঙ্গামাটি বান্দরবান সীমান্ত এলাকায় যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলছে। এই অভিযানে পাহাড়ের চারটি সেনা রিজিওনের আওতায় সহস্রাধিক সেনা সদস্য অংশ নিয়েছে। পাশাপাশি র‍্যাব সদস্যরাও অভিযান পরিচালনা করছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নিষিদ্ধ, পর্যটন, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন