বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে র‍্যাব-সন্ত্রাসীর বন্দুক যুদ্ধে ৫ জঙ্গি আটক

fec-image

বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রি-প্রাংশা এলাকায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও নব্য জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ এবং ‘কুকিচিন ন্যাশন্যাল ফ্রন্ট বা (কেএনএফ)’-এর ত্রিমুখি বন্দুক যুদ্ধে ৫ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে। এসময় র‍্যাবের ৮ সদস‍্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে থানচি লিক্রে সড়কের ২৭ কিলো এলাকায় রেমাক্রী ব্রিজের নিকট এ ঘটনা ঘটে।

জঙ্গি ও সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অবস্থান টের পেয়ে সেখানে র‍্যাবের ৬টি পেট্রোল টিম অভিযান চালালে তাদের লক্ষ‍্য করে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে।

পরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৫ সদস‍্যকে আটক করা হয়। এ অভিযানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয় র‍্যাবের ৮ সদস্য।

র‍্যাব জানিয়েছে, এখনো সেখানে থেমে থেমে গুলিবর্ষণ চলছে। দুপুরে থানচির তমাতঙ্গিতে র‍্যাবের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মো. কামরুল হাসান, র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, মিডিয়া উইং এর প্রধান কর্নেল খন্দকার আল মঈনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন জানান, পাহাড়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। এখনো পর্যন্ত সারাদেশে চলা অভিযানে ৪৩ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর ১৪ জন ও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে ১৭ জন জঙ্গিকে আটক করেছে র‍্যাব। এদিকে থানচিতে অভিযানের কারণে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, রাঙামাটির বিলাইছড়ির বথি পাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে প্রথম পর্যায়ে কুকি-চীন কেএনএফ’-এর তত্ত্বাবধানে নবগঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল শারক্বীয়ার প্রায় ৫২ জন সদস্য শসস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু করে। গত চার মাস ধরে রাঙামাটির বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে র‌্যাব জঙ্গি বিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের ফলে কেএনএফ ও জঙ্গি সদস্যরা উক্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে রুমা উপজেলার রেমাক্রি-প্রাংশা ইউনিয়নের বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ে ‘কেএনএফ-এর তত্ত্বাবধানে নবগঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল শারক্বীয়া-এর নিউ রিক্রুটদের নিয়ে আবারো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের ৬টি দল চার পাশ থেকে ঘেরাও করে অভিযান চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয় বলে জানায় র‌্যাব।

বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী এবং র‍্যাবের টহল বাড়ানো হয়েছে । গত ৩০ জানুয়ারি রুমায় সেনাবাহিনীর অভিযানে কেএনএফ এর এক সদস‍্য নিহত হওয়ার পর র‍্যাব থানচির কেএনএফ এর ঘাঁটিতে এই অভিযান চালিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মায়ানমার ও ভারত সীমান্ত এলাকায় র‍্যাব ও সেনাবাহিনী জঙ্গি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের কারণে বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি, পাহাড়, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন