বান্দরবানের সাত উপজেলায় নির্বাচন আগামীকাল

নিজস্ব প্রতিনিধি:

আগামী কাল সোমবার (১৭ মার্চ) পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বান্দরবানের সাত উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সাত উপজেলার ১শ’ ৭৬টি ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার মাধ্যমে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (১৭ মার্চ) বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন প্রিন্স, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত থেকে এসব সরঞ্জাম প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে হস্তান্তর করেন।

এসব কেন্দ্রে ১শ’ ৭৬ জন প্রিজাইডিং, ১শ’ ৭৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং এবং ৩শ’ ৫২জন পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন। ১শ’ ৭৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি দূর্গম ভোট কেন্দ্রে হেলিকপ্টার যোগে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে জেলায় ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭শ’ ৫৪জন ভোটার রয়েছেন।

নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুসারে, জেলার বান্দরবান সদরে ৬০ হাজার ৯শ’ ২৮জন, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৫ হাজার ৫শ’ ৭২জন, রুমা উপজেলায় ১৮ হাজার ৬শ’ ৪৫জন, থানচি উপজেলায় ১৫ হাজার ১ শ’ ১৯জন, লামা উপজেলায় ৬৬ হাজার ১শ’ ৮৬জন, আলীকদম উপজেলায় ২৯ হাজার ৫৯জন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৩৭ হাজার ৪শ’ ৪৫জন ভোটার রয়েছে।

এদিকে প্রথম ধাপের নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় তুলনামূলক ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

শুক্রবার জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সাধারণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে প্রচারণা করেছে প্রশাসন।

এছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, পার্বত্য জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা থাকবে।

একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারপরও ভোটের মাঠ স্থিতিশীল থাকলে অবশ্যই তারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

তবে এই নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের ভোটাররা নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায় ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

আলীকদমে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ও দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. আবুল কালাম ইতোমধ্যেই স্বতন্ত্র ভাবে মাঠে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তিনি নিজের বিজয় নিশ্চিত দেখছেন।

এছাড়া উন্নয়নের জন্য নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জামাল উদ্দিন।

একইভাবে বান্দরবান সদরে একাধিকবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুস এর সাথে প্রতিযোগিতা হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ জেলা সদর হিসেবে এই উপজেলাটি পুনরুদ্ধার করতে চান। আর আব্দুল কুদ্দুস চান নিজের দীর্ঘ তিন যুগের রাজনীতি ও মানুষের ভালোবাসায় পুনরায় জয়ী হতে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এই উপজেলায় প্রায় নিক্রিয়।

এদিকে বান্দরবানের সাত উপজেলার মধ্যে নির্বাচনের শুরু থেকে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে ছিল নাইক্ষংছড়ি উপজেলা। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের অধ্যাপক শফি উল্লাহর সাথে লড়ছেন অপর আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের কোম্পানী। একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্যশৈহ্লার আস্থাভাজন, অপরজন পার্বত্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় রাজনীতির মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

তবে এই উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যেই ভোটের মাঠে ছিল। পরিস্থিতি ভালো থাকলে তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে আগ্রহী।

এদিকে রুমা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান অংথোয়াইচিং (জেএসএস) ও উহ্লাচিং মার্মা (আওয়ামী লীগ মনোনীত) এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় ক্যাবামং (জেএসএস) ও চহাইমং মার্মা (আওয়ামী লীগ মনোনীত) প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গত সংসদ নির্বাচনে জেএসএস বিএনপির সাথে গা ঘেষে ভোটের মাঠে ছিল। কিন্তু নির্বাচনে ভরাডুবি হয়। যার কারণে নিজেদের শক্তি প্রদর্শণে তারা ভোটের মাঠেও হাড্ডাড্ডি লড়াই চালিয়ে যেতে চান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন