parbattanews

বান্দরবানে উৎসবের আমেজ: কাল বিষু, চলছে পহেলা বৈশাখ ও সাংগ্রাইয়ের প্রস্তুতি

10003989_1423688364550253_741535103_n

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাঙ্গালীদের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। পাহাড়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (আধিবাসী) মারমাদের সাংগ্রাইং, চাকমাদের বিজু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, ত্রিপুরা জনগোষ্টি বৈসু। সব মিলিয়ে পাহাড়ে সার্বজনীনভাবে এই উৎসবকে পালন করা হয়। এ উৎসবকে ঘিরে নানা আয়োজনের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বান্দরবানে। বান্দরবানে পাহাড়ী-বাঙ্গালীরা ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে এ উৎসব পলন করে থাকে। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বান্দরবানে সাজসাজ রবে সাজানোর আয়োজন চলছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন এবং মারমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের উৎসব উদযাপন পরিষদ ছয় দিনব্যাপী নানা আয়োজনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

তঞ্চঙ্গ্যাদের উৎসব ও টুর্ণামেন্ট উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা জাতীয় ঘিলাখেলা গোল্ডকাপ টুর্ণামেন্টের আয়োজন করেছে। কাল শনিবার রেইচা সিনিয়র পাড়ায় বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা জাতীয় ঘিলাখেলা গোল্ডকাপ টুর্ণামেন্ট । টুর্ণামেন্টে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি বসবাসরত ১৪ টি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার ১৪ দল অংশগ্রহন করবে জানিয়েছে  টুর্ণামেন্টের আহবায়ক আনন্দলাল তঞ্চঙ্গ্যাঁ।

জানা গেছে, তঞ্চগ্যা সম্প্রদায়ের বিষু উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয খেলা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ঘিলাখেলা। ঘিলা হচ্ছে পাহাড়ের জঙ্গলে জম্ম নেওয়া একটি ফল বা গোটা। তঞ্চগ্যাদের ধারণা ঘিলার লতায় ফুল থেকে বীজ জম্মালেও সাধারন মানুষ ফুল দেখতে পায়না। ফুল পবিত্র দেবংশি বস্তুু তাই সাধারন জনগন তা দেখতে পায়না। শুধু মাত্র মহামানবরা ঘিলার ফুল দেখতে পায়। তাই তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ফুলের পরিবর্তে বীজটিতে পবিত্র মনে করে বিপদ-আপত থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের ঘরে সংরক্ষন করে রাখে।  

জেলা প্রশাসন দুই দিন ব্যাপী নানা আয়োজন করেছে। শনিবার বান্দরবান শিশু একডেমিতে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা। সোমবার স্থানীয় রাজার মাঠ থেকে সকাল ৭ টায় বর্ণ্যাঢ্য আনন্দ র‌্যালী শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পূনরায় রাজার মাঠে শেষ শেষ হবে। পরে বান্দরবান আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পান্তা ও ইলিশ ভাজাসহ বাঙ্গালী ঐতিয্যবাহী খাবার পরিবেশিত হবে। সকাল ০৮ ঘটিকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্টান পরিবেশিত হবে। বিকাল তিনটায় মহিলাদের জন্য হা ডু ডু, বালক বালিকাদের মোরগের লড়াই, ঐতিয্যবাহী বলী খেলা পরে র‌্যাফেল ড্র অনুষ্টিত হবে।

সকালের র‌্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি উপস্তিত থাকার কথা রয়েছে।  

অন্যদিকে মারমাদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্টান সাংগ্রাইং কে ঘিরে ৬দিন ব্যাপী নানা অনুষ্টানের আয়োজন করেছে উৎসব উদ্যাপন পরিষদ। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের জানান উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অং চ মং বলেন, ১৩ এপ্রিল’ রবিবার সকালে পুরাতন রাজবাড়ী মাঠ থেকে প্রাক সাংগ্রাইং র‌্যালী, বয়স্ক পূজা,চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা।

১৪ এপ্রিল সোমবার দুপুরে উজানীপাড়া নদীর ঘাটে বুদ্ধমূর্তী  স্নান এবং রাতে উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়া ও কলা পাড়ায় ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরী উৎসব ঐতিয্যবাহী পিঠা তৈরী উৎসব। ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার পুরাতন রাজবাড়ী মাঠে বিকাল ৩ ঘটিকায় শুরু হবে মৈত্রি পানি বর্ষণ ও  রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৬ এপ্রিল বুধবার একই স্থানে মৈত্রি পানি বর্ষণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ ঘটিকা খ্যংওয়া ক্যং (রাজগুরু) এ ধর্ম দেশনা শ্রবণ ও সেমিনার।
এছাড়া জেলা সদরসহ উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যয়েও মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় মৈত্রী পানি বর্ষন (জলকেলি) অনুষ্টানের আয়োজন করেছে।

Exit mobile version