parbattanews

বান্দরবানে নির্বাচন অফিসের সার্ভার ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

জমির উদ্দিন:

বান্দরবান সদরে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সার্ভার ভবন (জেলা নির্বাচন অফিস ভবন) নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানাগেছে, উন্নয়ন সংস্থা গণপূর্ত বিভাগের তত্বাবধানে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবনটির কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্সের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ তদারকি করছে আবু তাহের। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মানে অনিয়মের সহায়তার অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত বিভাগের দায়ীত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্দে।

খোজ নিয়ে জানাগেছে, ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৩তলা বিশিষ্ট সার্ভার ষ্টেসন ভবনটি নির্মানের দরপত্রে সিলেটের ১নং পাথর ও সিলেটি ১নং মোটা বালু এবং উন্নত মানের সিমেন্ট দিয়ে নির্মান করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের প্রতিনিধি আবু তাহের, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে নিম্মানের স্থানীয় মাটি মিশ্রিত স্থানীয় বালু ও নিম্ম মানের সিলেটের পাথর দিয়ে এবং অখ্যাত ব্রান্ডের প্রাইম সিমেন্ট দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিগ্নে। এরই মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজের বিনিময়ে ৫০ লক্ষ টাকা প্রেরন করেছে গণপূর্ত বিভাগ।

ঠিকাদারের প্রতিনিধি আবু তাহের জানান, কাজ শুরু করার সময় এক ট্রাক সিলেটের বালি এনে ছিলাম। এখান থেকে সামান্য বালু আর স্থানীয় বালু মিশ্রিত করে কাজ করে যাচ্ছি। আর ১নং সিলেটের পাথরের দাম বেশী তাই মাঝাড়ী মানের পাথর দিয়ে কাজ করছি। এছাড়া অফিসের নির্দেশনায় প্রাইম সিমেন্ট দিয়ে স্থাপনার কাজ করছি।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্সের কাগজে কলমে প্রতিনিধি হিসেবে আবু তাহের কাজকর্ম দেখাশুনা করছেন। কাজের অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিলেটের মোটা বালু বা স্থানীয় বালু ব্যাবহারের কোন নির্দেশনা নাই। সিডিউলে এফ এম (মোটা দানা) লেখা থাকে। এব্যাপরে তিনি গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়ে কোন দরপত্র দেখাতে পারেনি প্রতিবেদককে। তিনি বলেন, ব্যাবহারের জন্য আনা পাথরগুলো সিলেটি এছাড়া প্রাইম সিমেন্টও ব্যাবহারের দরপত্রে নির্দেশনা রয়েছে। নির্মানের আগে যে ম্যাপ তৈয়ার করা হয়েছিল তা পরিবর্তন করে ভিন্ন আঙ্গিকে নির্মান করা হচ্ছে। এর ফলে নির্মান ব্যায় বেড়েও যেতে পারে তিনি জানান।

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এস এম তৌহিদুল ইসলাম জানান, সার্ভার ষ্টেসন ভবনটি নির্মানের জন্য আনা পাথর, বালি ও সিমেন্ট জেলার এল জি ইডির ল্যাবটারী থেকে পরিক্ষা নিরিক্ষার পর অনুমোদিত করা হয়েছে। এ ব্যাপরে আপনাদের কোন সন্দেহ থাকলে নিজেরা ল্যাব থেকে পরিক্ষা করে দেখতে পারেন।
পাথর, বালু ও সিমেন্ট ল্যাব পরিক্ষা-নিরিক্ষা প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী ক্য হ্লা খয় বলেন, সার্ভার ষ্টেসন ভবনটি নির্মানের কোন সামগ্রী এল জিইডির ল্যাব থেকে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করা হয় নাই। এ ব্যপারে কোন ছাড়পত্রও দেওয় হয় নাই।
এ বিষয়ে একাধিক প্রকৌশলী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাবী করেছেন, পাথরের কংক্রিট দিয়ে ভবন নির্মান খুবই স্পর্সকাতর। পাথর দিয়ে ভবন নির্মানে ১নং পাথরের সাথে সিলেটের (মোটা বালি) সাথে উন্নত মানের সিমেন্ট ব্যাবহার করা উচিৎ। এর ব্যাত্যয় ঘটলে নির্মিত ভবনটি যে কোন সময় ধ্বসের আশংঙ্খা রয়েছে।
স্থানীয় ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের দাবী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্বচন অফিসের সার্ভার ভবন নির্মানের অনিয়ম গুলি খতিয়ে দেখে প্রশাসন যথাযত ব্যাবস্থা নেবে। অন্যতায় ভবন ধসে ব্যাপক জান-মালের ক্ষতি আশঙ্খা রয়েছে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জেলায় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) আরেকটি ভবন নির্মান করছে। তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন অভিজ্ঞ মহলের দাবী।

Exit mobile version