বর্ষবরণকে সোমবার ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে চার দিনের বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে বান্দরবানে। দেশে ছড়িয়ে পড়া দ্বিতীয় ধাপের মহামারি করোনা ভাইরাসের থাবায় এখন প্রাণহীন হয়ে পড়েছে বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী গ্রামগুলো। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় বৈসাবির মঙ্গল শোভাযাত্রা, ফুল ভাসানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা কিছুই হচ্ছে না বান্দরবানে।
বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণে সোমবার চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও ত্রিপুরাদের ফুল বিজু। বর্মি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী মারমা, ম্রো, খুমি, খেয়াং ও চাকদের ফেইনসোয়ে (ফুল সাংগ্রাইং) অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার। তরুণ-তরুণীদের ফুল ভাসানো উৎসব না হলেও বাড়িঘর ফুলে ফুলে সাজানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৌদ্ধবিহারে ছইং (ভিক্ষুমন্ডলীর জন্য খাবার) প্রদান, ১৪ এপ্রিল বুদ্ধমূর্তি স্নানের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের (কেএসআই) পরিচালক মংনুচিং মারমা জানিয়েছেন, করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় জনসমাগম হয়, এমন কোনো আয়োজন করা হয়নি। এ জন্য সাংগ্রাইং উৎসব পারিবারিকভাবে উদযাপনের জন্য কমবেশি প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, বাইরে কোনো ধরনের উৎসব আয়োজন না করে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সীমিত পরিসরে বাড়িঘরে যে যাঁর মতো উৎসব করবেন। তবে সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
উল্লেখ্য, বান্দরবানে মহামারী করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব বর্ষবরণ বৈসাবি পালন না করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। সোমবার বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এ তথ্য জানান। মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে বৈসাবি উৎসব স্থগিত করা হয় বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন চেয়ারম্যান।