নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:
বান্দরবানে পৃথক ঘটনায় পাহাড় ধসে শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বান্দরবান-কেরেনীর হাট প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে শহরে বিভিন্ন এলাকায় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদেরকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসন ও পৌর সভার পক্ষ থেকে সকাল মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা শহরের ৩নং ওয়ার্ড কালাঘাটার বীর বাহাদুর নগরে মঙ্গলবার দুপুরে পাহাড় ধসে নিহত হন মিলন দাশের স্ত্রী প্রতিমা রানী দাশ (৫৫)। অন্যদিকে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কালাইয়া পাড়ায় পাহাড় ধসে এক পরিবারের শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন মো. মাঈন উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফ (৩০), হানিফের স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (২৫) ও মেয়ে হানিফা আক্তার (৩)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুর ২টার দিকে মঈন উদ্দিনের বসতঘরের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। এসময় নিহতরা সবাই ঘরের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর এ জান্নাত রুমি বলেন, মাটি চাপায় নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
বান্দরবানের মৃত্তিকা পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত থেকে বান্দরবানে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পাহাড় ধসের আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এদিকে ভারী বর্ষণে বালাঘাটায় পুলপাড়া বেইলি ব্রিজ পানিতে ডুবে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শহরের মেম্বারপাড়া, আর্মিপাড়া, শেরে বাংলা নগর ও বালাঘাটা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
টানা বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বাজালিয়া এলাকায় প্রধান সড়ক তালিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে বান্দরবানের সাথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বান্দরবান-রুমা সড়কে দৌলিয়ন পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
টানা বর্ষণে সাঙ্গু নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পাড়ের বসতিরা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবীসহ জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, বান্দরবানে পাহড় ধসে ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঝুকিপূর্ন পাহাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে অনুরোধ করেছেন।