বান্দরবানে বন্যায় স্থবির জনজীবন

fec-image

বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। শহর থেকে ধীর গতিতে পানি নামলেও আকাশে ভারী মেঘ ও থেমে থেমে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি ও লামা চার উপজেলায় বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলা শহরসহ লামা পৌর সদরের প্রধান সড়কে চলছে নৌকা।

রোববার দুপুরে জেলার লামা উপজেলায় পাহাড় ধসে মারা গেছে এক বৃদ্ধা। নিহত ওই নারীর নাম নূর জাহান বেগম (৬৫)।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে জান্নাত রুমি জানান- প্রবল বর্ষণে উপজেলার মধুঝিড়ি এলাকায় বসতবাড়িতে পাহাড় ধসে পড়লে নূর জাহান নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তিনি ওই এলাকার নূর হোসেনের স্ত্রী। একই ঘটনায় আহত হয়েছে নিহতের পুত্র মোহাম্মদ ইরান এবং পুত্রবধূ ফাতেমা বেগম নামে আরও ২ জন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

এদিকে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় আগামী ২৪ ঘন্টায় সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর নদী সমূহের পানি সমতলে আরো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানিয়েছে। গত আট দিনের টানা বর্ষণে জেলা শহরসহ বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের জীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। বাজারে মজুদ সংকটের পাশপাশি কাচা তরিতরকারির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ব্যবসা বানিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যা কবলিত এলাকাসহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছে জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা।

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু জানান, বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জেলায় ৪১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টার এবং বিদ্যালয়গুলোতে আশ্রয় নেয়াদের এই স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দিচ্ছে মেডিকেল টিম। জরুরি হলেই সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অতি বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে জেলার ৫ উপজেলা মারাত্মকভাবে এবং ২টি উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতি হয়েছে। এতে ১শ ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে এই পর্যন্ত ১০০ মে.টন জিআর চাল, ২লক্ষ টাকা, ৫হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ ও নিরাপদ পানি ও খাবার স্যালেইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলার ১৩১টি আশ্রয়ন কেন্দ্রে ৫হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম ও স্বাস্থ্যদানকারী সংস্থাকে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা, বান্দরবান, লামা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন