বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের লিফটে আটকা পড়ে সাবেকুন্নাহার সাবু (১৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দারোয়ান নুরুল আমিন (৬০)। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার সময় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত অবস্থায় নুরুল আমিনকে উদ্ধার করার পর ভবনের দেয়াল কেটে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে উদ্ধার কর্মীরা।
ভবনের বাসিন্দা মৌলানা আবুল কালাম জানান, দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দারোয়ান ফোন দিয়ে বলে যে, তিনি লিফটে আটকা পড়েছে তাকে উদ্ধার করতে। তিনি সাথে সাথে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে জানায়। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে লিফটে আটকা পড়া দারোয়ানকে উদ্ধার করে। কোন ফ্লোরে শিশুর লাশ আটকে আছে বিষয়টি সনাক্ত করতে না পেরে উদ্ধার কাজ চালাতে গিয়ে উদ্ধার কর্মীকে অনেকটা বেগ পেতে হয়। অবশেষে ভবনের দেয়াল কেটে বিকাল পাঁচটায় শিশু সাবেকুন্নাহারের লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর দারোয়ান নুরুল আমিন জানান, দুপুরে লিফটের নিচ থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ছে দেখে লিফট চেক করতে গিয়ে ভেতরে আটকা পড়ে যাই। লিফটের ভেতর এক শিশুর লাশ রয়েছে বলে তিনি জানান।
ওই ভবনের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সোহেলের স্ত্রী জানান, তাদের গৃহকর্মী সাবেকুন্নাহারকে গত কাল থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা। লিফটাও প্রায় সময় নষ্ট থাকে এবং তেমন ব্যবহার করা হয়না। লিফটে আটকা পড়া শিশুর লাশটি তার গৃহকর্মীর হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
ভবনের আরেক বাসিন্দা এ্যাড. মহতুল হোসাইন যত্ন বলেন, পেরিস প্যারাডাইস নামক ডেভেলপার কোম্পানি অপরিকল্পিত একটি ভবন নির্মাণ করেছেন। মোট সাত তলা বিশিষ্ট ভবনটির ২, ৩ ও ৪ তলায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। উপরের তিন ফ্লোর আবাসিক। লিফটে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফ্লোরে নামার মত কোন দরজা রাখা হয়নি। বিদ্যুৎ চলে গেলে বা যে কোন কারনে লিফট আটকে গেলে নামার কোন উপায় নেই। এই শিশুও এভাবে লিফট আটকে মৃত্যু হয়েছে।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নাজমুল হোসেন জানান, সাত তলা বিশিষ্ট ভবনের প্রত্যেক ফ্লোরে লিফটের দরজা নেই। লিফটে আটকে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. জহির জানান, লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রির্পোট পেলে বলা যাবে শিশুটির কীভাবে মারা গেছে।