বান্দরবানে সেনাবাহিনীর পাল্টা জবাবে ৩ কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত

fec-image

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাথে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলিতে ৩ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এক পর্যায়ে পাহাড় তল্লাশি চালিয়ে গুলিতে নিহত এক কেএনএফ সন্ত্রাসীর লাশ ও অস্ত্রসহ গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে পাহাড় তল্লাশি চালিয়ে এক কেএনএফ সদস্যের লাশ, একটি লম্বা বন্দুক ও বেশ কিছু গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের টেবিল পাহাড়ের অদূরে দুর্গামাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) মধ্যে। এতে ৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হলেও বাকি লাশ দুটি পাওয়া যায় নি।

স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার দুর্গম মুন্নম পাড়া, আরথা পাড়া ও মুলপি পাড়া এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে কেএনএফ এর সশন্ত্র সদস্যরা অবস্থান নিয়ে এসব পাড়ার লোকজনের উপর জুলম, অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে ইতোমধ্যে অনেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে উপজেলা সদরে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টি খবর পেয়ে রুমা সেনাজোনের একাধিক দল গত ৩ দিন ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালানোর সময় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপরে অতর্কিত গুলি চালায়। এসময় সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিলে সেনাবাহিনীর সাথে কেএনএফ সদস্যদের ব্যাপক গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে কেএনএফ সদস্যরা পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত ফসল আদা-হলুদ এবং বিভিন্ন ফলন তুলতে পারছে না গ্রামবাসী। পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারি সাকনা অং মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। তাদের বর্তমানে মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় দিয়েছি। পালিয়ে আসাদের মধ্যে মারমা এবং বম জনগোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে। কয়েকদিন আগে এক পাড়াবাসীকে পিটিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।

এ ব্যাপারে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার দুর্গম মুন্নম পাড়া, আরথা পাড়া ও মুলপি পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এসময় পাহাড় তল্লাশি চালিয়ে একটি বন্দুক কিছু কার্তুজসহ এক কেএনএফ সন্ত্রাসীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, ‘পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তার বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসে। পরে সেখান থেকে তাদের রুমা সদরে নিয়ে এসে ক্লাবঘরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’ এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অস্ত্র, কেএনএফ, গুলি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন