parbattanews

বান্দরবান সীমান্তে গোলাগুলি, স্কোয়াড্রন লিডারসহ নিহত ২

বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ির তুমব্রু সীমান্তে নোম্যান্সল্যান্ডে মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে গুলিতে সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তাসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৩ রোহিঙ্গা।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সামরিক কর্মকর্তা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ে কর্মরত। নিহত অপর জন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা সাজেদা বেগম (২০)। হতাহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পর সীমান্তের উভয় দিকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি। জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা শিবিরের কাউকেই বাইরে আসতে দেয়া হচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাদক পাচারকারীদের একটি চক্র তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থান করছে- খবর পেয়ে সোমবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে সেখানে র‍্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় রোহিঙ্গা শিবির থেকে মো. জামাল নামের এক পাচারকারীকে আটক করা হয় ঘটনার পরেই অভিযানকারী র‍্যাবের দলটির ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে মাদক পাচারকারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই অভিযানকারী দলে থাকা ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রোহিঙ্গা নারী সাজেদা বেগম। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় রোহিঙ্গা শিবিরের আরও ৩ বাসিন্দা।

রোহিঙ্গা শিবিরের দলনেতা দিল মোহাম্মদ ও ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমার অংশের তুমব্রু লেফ্ট ক্যাম্প অংশ থেকে শতাধিক রাউন্ড গুলি করা হয়। এ সময় আতঙ্কে রোহিঙ্গারা নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়।

ঘটনার পর বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা সেখানে গিয়ে নিহত স্কোয়াড্রন লিডার রেজওয়ানের লাশ উদ্ধার করে। এ ছাড়া হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার ও উখিয়ার এমএসএফ হাসপাতালে। বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার পর জনসাধারণের নিরাপত্তায় পুলিশি ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনাকালে মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ভেতরে তমব্রু সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে মাদক চোরাচালানকারীদের গুলিতে দায়িত্বরত অবস্থায় ডিজিএফআইয়ের একজন কর্মকর্তা (বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা) দেশের জন্য আত্মত্যাগ করে শহীদ হন এবং র‌্যাবের একজন সদস্য আহত হন।

এদিকে গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার খবরের ভিত্তিতে তুমব্রু সীমান্তে মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছিল। দুর্ঘটনাবশত একজন অফিসার সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি কীভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন এবং কেন মাদক কারবারিরা তাকে গুলি ছুড়লো- এসব বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ ঘটনার সত্য উদ্ঘাটন করে আমরা পরবর্তীতে জানাবো।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর)  ঢাকার মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকরা তুমব্রুর ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে মন্ত্রী বলেন, অভিযানের জায়গাটি নোম্যান্সল্যান্ড। সেখানে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থান বলে জানা গেছে। যখন এ ধরনের অভিযানে যাওয়া হয় তখন গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনামাফিক অভিযান হয়ে থাকে।

Exit mobile version