parbattanews

বিজু’র আমেজ কম, আতঙ্কে পাহাড়িরা!

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

রাঙ্গামাটিতে উপজাতি সম্প্রদায়ের মাঝে পাহাড়ের সামাজিক উৎসব বিজু’র আমেজ কম। আতঙ্কে আছে সাধারণ পাহাড়িরা।

সম্প্রতি দ্বিতীয় ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জেলার বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় হত্যাকান্ডের পর থেকে পাহাড়ে আতঙ্কের সূত্রপাত হয় । এই হত্যাকান্ডের পরপরই পাহাড় উত্তাল হয়ে উঠে বিক্ষোভ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচিতে।

ইতিমধ্যে হত্যাকান্ডের পরপর অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইল ফোনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে হত্যার হুমকি প্রদান করছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এ বছর পালিত হচ্ছে না মারমা সম্প্রদায়ের সামাজিক উৎস ঐতিহ্যবাহি জল উৎসব বা জলকেলি।

এদিকে মারমা সংস্কৃতি সংস্থার (মাসস) সাধারণ সম্পাদক মংউচিং মারমা অভিযোগ করেন, বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়ি হত্যাকান্ডের কারণে পাহাড়ের পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এ বছর জল উৎসব বা জলকেলি অনুষ্ঠান পালন করতে পারছি না।

সম্প্রতি এই হত্যাকান্ডের কারণে বিভিন্নভাবে মারমা সংস্কৃতি সংস্থার (মাসস) সভাপতিসহ সংস্থার সদস্যদের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে ।

তিনি আরও জানান, আমরা যদি অনুষ্ঠান পালন করি তাহলে  বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার লোকের আগমন ঘটবে। কিন্তু হুমকির কারণে অনেকেই তাদের চলাফেরা নিরাপদ মনে করতে পারছে না। তাই  যাদেরকে নিয়ে অনুষ্ঠান করবো তারাই যদি নিরাপদ মনে না করে তাহলে এই উৎসবের প্রয়োজন কি বলে তিনি জানান।

অপরদিকে, চাকমা সম্প্রদায়ের সান্তনা চাকমা, মনিমালা চাকমা ও উদয় শংকর চাকমা এবং ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের স্বপন ত্রিপরার সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিজু’র আমেজ খুবই কম। গত বছর পাহাড় ধ্বস হলেও বিজুর আমেজটা অন্য রকম ছিলো। এই বছর রাজনৈতিক দ্বন্ধের কারণে সম্প্রতি হত্যাকান্ডের ঘটনার ফলে বিজুর আমেজ তেমন নাই। কারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছে।

তারা আরও জানান, সামাজিক উৎসব হিসেবে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বিজু উৎসব পালন করতে হচ্ছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের দুঃখ, কষ্ট ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য এই উৎসব পালন করে।

তবে এই বছর বিজু উৎসব পালন করবে কিনা দ্বিধা-দ্বন্ধের মধ্যে আছেন পাহাড়িরা। কারণ পার্বত্যাঞ্চলের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে জেলা পরিষদ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী ‘বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু মেলায় গতবার পাহাড়িদের সব জাতিগোষ্ঠী অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও এবার বেশিরভাগ অনুপস্থিত।

অনুপস্থিতির মূল কারণ পাহাড়ের চলমান অস্থিতিশীলতা বলে জানা গেছে।

Exit mobile version