parbattanews

বিজুর পর পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে: উষাতন তালুকদার

Rangamati bizu pic07 copy
স্টাফ রিপোর্টার:
এপ্রিল মাসের মধ্যে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে না আসলে বিজুর পর পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ার দিয়েছে, রাঙামাটি-২৯৯ আসনের সংসদ সদস্য  ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তি উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে বাস্তবায়ন করছে না।যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই পাহাড়ের যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে। জনসংহতি সমিতির বেধে দেওয়া সময়সূচীর মধ্যেই সরকারকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট সময়সূচী ঘোষণা দেয়ার আহবান জানান তিনি।

শুক্রবার সকালে রাঙামাটি পৌর চত্বরে পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-সংক্রান, বিষু বিহুসহ তিনদিন ব্যাপী বৈসাবী উৎসবের উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারমম্যান ও শিক্ষাবিদ ড. মানিক লাল দেওয়ান।

‘বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামে’র সভাপতি প্রকৃতিরঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি-২৯৯ আসনের সংসদ সদস্য  ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেসনের আহবায়ক বিজয় কেতন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গোতম দেওয়ান, রাঙামাটি  পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জগৎ জ্যোতি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মাধবীলতা চকমা, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিজয় রতন দে, জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ চাকমা, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, ইউসুফ আলম প্রমুখ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির এ নেতা উষাতন তালুকদার আরও বলেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের নানা কথা মুখে বলেও কাজে করেনি। এভাবে সময় অতিবাহীত করছে। যার কারণে আজ পাবত্যাঞ্চলের জুম্মজাতিসত্তাগুলো মুক্তমন ও স্বাধীন অনুভূতি নিয়ে বিজু উৎসব পালন করতে পারছে না। যদি আজকে পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গবাস্তবায়ন হতো পাহাড়ের মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও উৎসবে শান্তিতে পালন করতে পারতো।

তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে সরকার স্বীকৃতির নামে পার্বত্যাঞ্চলের জুম্মজাতিসত্তাগুলোকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলে ১১টি ভাষাভাষির ১৪টি জাতিগোষ্ঠি বসবাস করে। তাই প্রত্যেক সম্প্রদয়ের তাদের  নিজস্ব জাতি হিসেবে পরিচয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতির অধিকার রয়েছে। তাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসাবে নয়, দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোকে আদিবাসী পরিচয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে সরকারকে।’

আলোচনা সভা শেষে রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে বৈসাবি উৎসবের র‌্যালীর উদ্বোধন করেন উষাতন তালুকদার। এর আগে উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে পাহাড়ি নারীদের একটি যৌথ নাচ পরিবেশনা করা হয়। র‌্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে গিয়ে শেষ। এসময় ঐতিহ্যবাহী পোশাকে বর্ণাঢ্য সাজে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে চাকমা, মারমা, খুমী, ম্রো ও চাক, বম, খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, অহমিয়া, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করেন।

Exit mobile version