বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁর বড় স্বপ্ন


২০১৭ সালে অপেশাদারের মতো বাংলাদেশের চাকরি ছেড়ে শ্রীলঙ্কায় পাড়ি দেওয়া হাথুরুসিংহেকে পাঁচ বছর পর ফেরানোর পেছনেও তো রয়েছে সেই স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা। কোচের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজের স্বপ্নের কথা বলেও দিয়েছেন। এ বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে দেখতে চান তিনি।
হাথুরুসিংহেও ভালো করেই জানেন, বিসিবি কী চায় তাঁর কাছে। বিশ্বকাপে ভালো ফল বয়ে আনা এবং সাকিব, তামিম-উত্তর বাংলাদেশ দলটাকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা। চার সিনিয়র ক্রিকেটার বিদায় নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাতে খেই হারিয়ে না ফেলে বাংলাদেশ, সে চ্যালেঞ্জ জয় করতেই হাথুরুসিংহের নতুন করে ফেরা।
হাথুরুসিংহে পক্ষ ও বিপক্ষের সবল-দুর্বলতা যেমন ভালো বোঝেন, তেমনি কাকে কখন জাতীয় দল থেকে সরাতে হবে ও নিতে হবে- তাতেও পাকা বুদ্ধির খেলোয়াড় তিনি। ২০১৭ সালে প্রবল জনপ্রিয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে যেমন সুকৌশলে আন্তর্জাতিক টি২০ থেকে অবসর নিতে বাধ্য করেছিলেন, তা কোনোদিনও ভোলার নয়। মুশফিকুর রহিমের আবেগ দলে মুচড়ে দিয়েছিলেন টেস্টের কিপিং থেকে সরিয়ে। ফারুক আহমেদ প্রধান নির্বাচকের পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন হাথুরুসিংহের কৌশলের কাছে হেরে গিয়ে। তিনি কোচ থাকলে ২০১৯ বিশ্বকাপ হয়তো খেলা হতো না মাশরাফির। ফর্ম না থাকার কারণে তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্বকাপ ম্যাচে ড্রপ দিতে দ্বিধা করতেন না হাথুরুসিংহে। স্টিভ রোডস বা রাসেল ডমিঙ্গো যে কাজ করতে পারেননি, হাথুরুসিংহেকে দিয়ে সে কাজই হয়তো করাতে চায় বিসিবি।
একই সঙ্গে পরবর্তী ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপে বড় স্বপ্ন পূরণের সুপ্ত বাসনাও তো রয়েছে। সবকিছু জেনেশুনেই হাথুরুসিংহের চ্যালেঞ্জ নেওয়া। ভরা সংবাদ সম্মেলনে তা তিনি বললেনও, ‘কোচরা সব সময় চাপে থাকে দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে। আমাদের সবারই প্রত্যাশা আছে, জাতি হিসেবেও। কারণ, বিশ্বকাপটা ভারতে হবে। আমরা এই সংস্করণে সত্যিই ভালো খেলি। একইভাবে আমরা আমাদের প্রস্তুতি এবং সামর্থ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের ফিটনেস ও স্বাস্থ্যগত দিকটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যদি সেটা করতে পারি, তাহলে বিশ্বকাপে সত্যিই ফাটল ধরাতে পারব।’
হাথুরুসিংহে ঢাকায় পা রেখেছেন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে। পরের দিন সকালেই চলে এসেছিলেন মিরপুরের চেনা প্রাঙ্গণে। গতকাল তো সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন মিটিং নিয়ে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ, সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীর সামনে উপস্থাপন করেছেন নিজের ভিশন ও মিশন। বিসিবি সভাপতির মতে, ‘কয়েকজন ক্রিকেটারের সম্পর্কে ভালোভাবে স্টাডি করে এসেছেন কোচ। কে কীভাবে আউট হচ্ছে, সেটা বলেছে। ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ দুটিতে পর্যবেক্ষণ করতে চান তিনি।’ বিসিবি সভাপতির কাছে একটু বেশি সময় চেয়ে রাখলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষেই বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় এগোতে চান হাথুরুসিংহে।