বিশ্ব পরিবেশ দিবস: রক্ষার পরিবর্তে ধ্বংসের মহোৎসব

fec-image

প্রতিবছর এই দিনে যথাযথ মর্যাদায় আন্তজার্তিক পরিবেশ দিবস পালিত হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় জন্য সচেতনতা তৈরিতে সারাবিশ্বে প্রচারণা চালিয়ে, নেয়া হয় নানা কর্মসূচি। সেখানে বান্দরবানে থানচিতে উন্নয়নের নামে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে অসাধু চক্র।

বুধবার (৫ জুন) থানচি উপজেলা সদরের মরিয়ম পাড়া, যোসেফ পাড়া ও বাসস্টেশন এলাকায় চলে এ পাহাড় কাটার ধ্বংসযজ্ঞ।

স্থানীয়রা জানায়, “করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ সারা দেশে পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ রক্ষার নিয়ম নীতির তওয়াক্কা না করে থানচি উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি শৈক্যচিং মারমা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সচীন চন্দ্র ত্রিপুরার নেতৃত্বে থানচি বাস স্টেশন, যোসেফ পাড়া ও মরিয়ম পাড়া এলাকায় দিন দুপুরে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে। এর আগেও উপজেলা সদরে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করার অপরাধে নাম মাত্র জরিমানা করেছিল প্রশাসন। তবে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পরিবেশ ধ্বংসকারী চক্র। এছাড়া এসব অনিয়ম সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসন জানলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে।

উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি শৈক্যচিং মারমা পাহাড় কাটার সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জানান, শেখ রাসেল স্টেডিয়াম নির্মাণে মাটি ভরাটের প্রয়োজন রয়েছে। আশেপাশে ভরাটের জন্য মাটি না পাওয়ায় মালিকের সম্মতিতে পাহাড় কেটে স্টেডিয়ামে মাটি দেয়া হচ্ছে। পাহাড় কাটার অনুমতি পেতে বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সচীন চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, সাধু যোসেফ পাড়া থেকে মরিয়ম পাড়ার রাস্তাটি করার জন্য পাহাড় কাটা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে।

তবে অনুমোদন না পাওয়ার আগে পাহাড় কেটে আইন লঙ্ঘন হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সুদুত্তর দিতে পারেন নি।

বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন জানান, ঠিকাদারের পক্ষ থেকে পাহাড় কাটার অনুমতি চেয়ে আবেদ করেছে। আবেদনগুলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

তবে অনুমোদন পাওয়ার আগে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবেদন করলেও অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত পাহাড় কাটার কোন বৈধতা নেই। অবৈধ উপায়ে এসব পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড় কাটার অপরাধে মরিয়ম পাড়ায় নিবাসী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সুরেন্দ্র ত্রিপুরার বিরুদ্ধে এর আগেও মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, পাহাড় কাটার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: থানচি, বান্দরাবন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন