parbattanews

‘বীর বাহাদুর ছিলেন নেপালী, জুম্মদের সাথে প্রতারণা করার জন্য হয়েছেন উশৈশিং’- জেএসএস নেতৃবৃন্দ

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:

‘সেই নেপাল থেকে এসে পার্বত্য বান্দরবানে ঘাঁটি করে পরিচিত ছিলেন, বীর বাহাদুর নেপালী। যেখানে আপনার কোনো অধিকারই থাকার কথা নয়, সেখানে নামের শেষাংশ নেপালী বাদ দিয়ে উশৈশিং লাগিয়ে নিজেকে বসন্তের কোকিল হিসেবে আখ্যায়িত করে বান্দরবানের প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে ভূলিয়ে ভালিয়ে ভোটের রাজনীতিতে অনেকদিন ধরে রাজত্ব করে আসছেন, তাই বহিরাগত হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বীর বাহাদুরের কোনো অবস্থান থাকতে পারেনা।’ অভিযোগ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দ।

বান্দরবানের লামায় ভূমিদস্যুদের দ্বারা জুম্মদের জমি জবর দখল ও হামলার প্রতিবাদে বুধবার রাঙামাটি শহরে সন্তু লামরা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও যুব পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, ‘আমরা পার্বত্যাঞ্চলের অধিবাসিরা এতদিন মুখ বুঝে সব সহ্য করেছিলাম এবং আপনাকে সুযোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরেও আপনি আপনার নেপালের মায়া ছাড়িতে পারেন নাই। তাই আপনাকে আগামী নির্বাচনে উপজাতীয় জনগণের পক্ষ থেকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে’ বলেও হুমকি প্রদান করা হয়েছে সমাবেশ থেকে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেএসএস নেতা শরৎ জ্যাতি চাকমা, উদয়ন ত্রিপুরা, নারী নেত্রী সুপ্রভা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা রিপেশ চাকমা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুব সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সমর জ্যাতি চাকমা।

বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, মহাজোট সরকার বর্তমানে গাছের শুকনো পাতার মতো ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। একটি শুকনো পাতা ঝরে পড়ার আগে গাছের ডালে যেমন ঝুলে থাকে, ঠিক তেমনি। যেকোনো সময় ঝরে পড়তে পারে। তাই এখন আর আমরা মহাজোট সরকারের কাছ থেকে কিছু আশা করতে পারিনা উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের জুম্ম জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে, সুতরাং আমরা তাদের সাথে বেঈমানী করতে পারিনা। তাই আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে যেকোনো ধরনের আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে বান্দরবানে উপজাতীয় সাধারণ জনসাধারণের উপর ভূমি দস্যুরা নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার সাড়ে চারটি বছর পর হওয়ার পরেও পার্বত্য চুক্তির মৌলিক ধারা গুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়ন করে নাই। অথচ এই পার্বত্য চুক্তির আলোকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও তিনি চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নেন নাই। বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্যাঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্রের জ্বাল এমনিভাবে বিস্তার লাভ করেছে যে, মহাজোট সরকার চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসীদের পুর্নবাসনের মাধ্যমে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে চায় জনসংহতি সমিতি দুর্বল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আর আলোচনা না করলেও চলবে।

বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমরা আমাদের নেটওয়ার্ক এমনিভাবেই বিস্তার করেছি যে, জনসংহতি সমিতি চাইলে পার্বত্য তিন আসনসহ সারাদেশে পঞ্চাশটি আসনে নির্বাচন করে জিততে পারবো।

Exit mobile version