বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আটকা কক্সবাজার পৌরসভার উন্নয়ন কাজ!
কাঙ্খিত পর্যায়ে এগুচ্ছেনা কক্সবাজার পৌরসভার উন্নয়ন কাজ। কিছুদূর গিয়ে আটকে পড়ে সড়কের উন্নয়ন ও ড্রেন সংস্কার কাজ। ঢিমেতালে এগুচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কক্সবাজার পৌরসভার ড্রেন সংস্কার প্রকল্পের জন্য ১২৯ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয় বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পের কক্সবাজার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ৮টি প্যাকেজের মাধ্যমে ড্রেন ও রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। পৌর প্রশাসন ও পরিসেবা প্রকল্প (এমজিএসপি) আওতায় প্রকল্পের কাজ করছে ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
শহীদ স্বরণী, বিমানবন্দর সড়ক, মোহাজেরপাড়া, বাহারছড়া গোলচত্বর, বাদশাঘোনা, গোলদীঘিরপাড়া, জেলেপার্ক, কলাতলীসহ বিভিন্ন এলাকার ড্রেনিং ও রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তুু মাঝপথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আড়াই শতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি।
প্রায় ছয় মাস আগে কাজ শুরু হয়েছে। এখনো অর্ধেকেরও বেশি কাজে হাত পড়েনি, এমনও রয়েছে। খুঁড়েখুঁড়ে রাখা হয়েছে সড়কগুলো। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পৌরবাসি। বদনাম হচ্ছে পর্যটন শহরের। তবে, ধীরগতির জন্য সড়কে অপরিকল্পিত খুঁটি বাসনোকে দায়ী করা হচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য রাশেদুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটি মূল সমস্যা নয়। কাজের ব্যর্থতা ঢাকতে খুঁটির অজুহাত দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সব সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটির সমস্যা নেই। যে সব সড়কে খুঁটির সমস্যা নেই সে সব সড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। পুরো উন্নয়ন কাজে খামখেয়ালিপনা দেখছে পৌরবাসী।
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা দুঃখ করে বলেন, আমার বাড়ির সামনের সড়কের বেহাল অবস্থা। এখানে তো খুঁটির কোন সমস্যা নেই। তিনি বলেন, এই সড়কে বায়তুশ শরফ মসজিদ, বায়তুশ শরফ স্কুল, ডিসি কলেজসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারপরেও তারা সড়কটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমি নিজেও ভোগান্তির শিকার।
এদিকে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ ও উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গনি বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করতে হবে। উক্ত প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারের যদি আমাদের সহযোগিতা চায়, তবে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এছাড়াও পৌর কর্তৃপক্ষ যথাযথ অর্থ বরাদ্দ দিলে তা আমাদের মাধ্যমে করা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা টেন্ডারের মাধ্যমে করলে ঢাকা থেকে মালামাল নিয়ে আসাসহ নানা জটিলতায় প্রকল্পের কাজ আরো দেরি হতে পারে।’
কক্সবাজার পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী টিটন দাশ বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের ১২৯ কোটি টাকার অর্থায়নে কক্সবাজার পৌরসভার অধীনে ৮টি প্যাকেজের মাধ্যমে ড্রেন ও রাস্তা সংস্কার যথা নিয়মে শুরু করি। বর্তমানে ড্রেনের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকী রয়েছে ৩০ শতাংশ মতো।’ তিনি বলেন, ’বিদ্যুৎ বিভাগের আড়াই শতাধিক খুঁটি কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস ইন্টারন্যাশনালের ইঞ্জিনিয়ার মোফাশ্বের হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অল্প কাজের জন্য সংস্কার কাজ আটকে থাকায় নির্ধারিত সময়েও প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। তবে, যেসব এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি নেই সেব এলাকায় কাজ কেন হচ্ছে না, এমন প্রশ্নটি এড়িয়ে যান তিনি।