ব্রিজ না থাকায় ধান ক্ষেত মাড়িয়ে মরদেহ পারাপার, ফেসবুকে ভাইরাল
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল জারাল্যাঝিরি এলাকায় ধান ক্ষেত মাড়িয়ে খাটিয়ায় করে মরদেহ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার ছবি ভাইরাল হয়েছে।
এ ছবি ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীরা জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের অবহেলিত এ এলাকায় ব্রিজের অভাবে বারবার অমানবিক চিত্র ফুটে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
জানা যায়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকাল ৫টার দিকে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার বাসিন্দা ডাক্তার নুরুল আবছারের ছোট চাচী মারা যান।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় তার মরদেহ নিয়ে জানাযা পড়ার উদ্দেশ্যে শাহ সুজা সড়কের জারুলিয়াঝিরি নামক জায়গায় পৌঁছলে ব্রিজ না থাকায় লোকজন একা একা বাঁশের সাকো দিয়ে পার হয়। কিন্তু খাটিয়াসহ মরদেহ নিয়ে ঐ বাঁশের সাকো দিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে একশ’ মিটার দূরত্ত্বের ধান ক্ষেত পাড়ি দিয়ে খাটিয়ায় করে মরদেহকে কবরস্থানে নিয়ে যেতে হয়েছে।
মরহুমের নাতি মো. সরওয়ার জাহান বলেন, আজ আমার দাদি মারা গেছে। কাল আরেক জনের মা অথবা বাবা মারা যাবে। আর কত লাশের ভিডিও করে এমন অমানবিক চিত্র জনপ্রতিনিধি ও সরকারকে দেখালে এর সমাধান হবে, এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি?
তার অভিযোগ, কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে অবহেলিত এলাকা হচ্ছে গর্জনীয়া ইউনিয়নের বড়বিল।
তিনি আরও বলেন, এখানকার স্থানীয়রা জানে না কে তাদের ইউপি চেয়ারম্যান? কে তাদের উপজেলা চেয়ারম্যান, কে তাদের এমপি? এছাড়া এসব সড়ক ও ব্রিজের কারণে ওই এলাকার ছোট্ট কোমলমতী শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ কারণে এই এলাকার মানুষ বেশির ভাগই অশিক্ষিত।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলমকে আমি বার বার অনুরোধ করে বলেছি, বড়বিলে একটি ব্রিজের দরকার, কিন্তু তারা কেউ কথা শোনে না। এজন্য এর সমাধান হয়নি। ব্রিজের জন্য প্রায় ২০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী থাকে বলে দাবি তার।
এ ব্যাপারে গর্জনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে সদ্য শপথ গ্রহণকারী রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে আগে রামু গর্জনিয়ার বড়বিল এবং কাউয়ার খোপের সোনাইছড়ি এলাকায় ব্রিজের অভাবে বাঁশের খাটিয়ায় করে মরদেহ পারাপারের ঘটনা ঘটেছিল।