parbattanews

বড় পর্দায় অভিনয় করতে চান ঝিকি চাকমা

ঝিকি চাকমা

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির মেয়ে ঝিকি চাকমা। চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গানের পাশাপাশি আধুনিক গান ও নাচ করেন। সংষ্কৃতি অঙ্গনে নিজেকে মেলে ধরতে চান তিনি। পাশাপাশি মডেলিংও করেন। চাওয়া বড় পর্দায় অভিনয়ও করবেন। চাকমা জাতির মেয়ে হলেও পিতার চাকরীর সুবাধে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সমতলে। বাঙালিদের সাথেই বেড়ে ওঠা। বাংলা ভাষাই শিখেছেন সহজে। শিল্প সংস্কৃতিতে পথ চলায় বাঙালিদের কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছেন। পরিবার ও চাকমা বন্ধু-স্বজনদের সহায়তায় চাকমা ভাষা শিখেছেন। কিন্তু তিনি নিজে নিজ জাতি চাকমা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে দেশে ও বিশ্বের মাঝে তুলে ধরতে চান।

সম্প্রতি পার্বত্যনিউজের ক্যাম্পাস তারকা অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি। তার সঙ্গে এ আলাপচারিতায় ছিলেন পার্বত্যনিউজের সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ

পার্বত্যনিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান তার সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রতি ছোটবেলা থেকে ভালো লাগার কথা। তিনি বলেন, ছোটবেলায় টেলিভিশনে সিনেমা দেখতে দেখতে সংষ্কৃতি অঙ্গনের প্রতি ভালো লাগা। তৈরি হয়। তখনই মনে হয় আমি যদি সংস্কৃতি অঙ্গনে কাজ করতে পারি। ছোটবেলায় মায়ের কাছে নাচ শেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। ছোটবেলায় চট্ট্রগ্রাম ও কক্সবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে নাচ শিখি। এখন চট্টগ্রাম ইপিজেডে মিউজিক লার্নিং পয়েন্টে নাচ শেখায়। নিজের স্কুলে গান শেখায়। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গানের প্রোগ্রাম করি। পাশাপাশি মডেলিং করছি।

তিনি বলেন, আমি আধুনিক গান করতে পছন্দ করি। মাঝেমাঝে রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীতও করি। তবে চাকমা গান করতে বেশি পছন্দ করি। যেহেতু এটা আমার জাতির গান। ঐতিহ্যগত, লোকনৃত্য নাচ করি। আধুনিক ও হিপহপ নাচও করতে পছন্দ করি মাঝেমাঝে। সুকন্যা এওয়ার্ড নামে নাচের একটি অনুষ্ঠানে সেকেন্ড রানার আপ হয়েছি। সেখানে গিয়ে মনে হলো আমিও পারি। এছাড়া ফোকাসে, আজকাল ম্যাগাজিনে মডেলিং করেছি। চট্ট্রগ্রামভিত্তিক কিছু র‌্যাম্প শোতে কাজ করেছি।

বাঙালিদের সাথে নিজের সম্পর্কের নানাদিক তুলে ধরে ঝিকি চাকমা বলেন, ছোটবেলা থেকে বাঙালিদের সাথে বড় হওয়া, এ জন্য এ ভাষা শিখতে কোন সমস্যা হয়নি। তবে চাকমা ভাষা শিখতে কষ্ট হয়েছে। এ নিয়ে একটি রেডিওতে কথা বলতে গিয়ে বিতর্কেরও তৈরি হয়।

বাঙালিদের সাথে মেশার কারণে তাদের মধ্যে এ নিয়ে কোন জড়তা দেখেছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমনটা আমি কখনোই বোধ করিনি, ওরাও কখনও এটা বোধ করেনি। তাদের মধ্যে এ ধরণের ভেদাভেদটা কখনও আসেনি। সবাই আমাকে কাছে টেনে নিয়েছে। বাঙালিরা আমাকে সাপোর্ট করেছে, পরিবার সাপোর্ট করেছে। চাকমারাও সাপোর্ট করেছে।

তিনি বলেন, চাকমারা অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছে। কিন্তু সবাই আমাকে ভালোবাসে। ওরা ভালো না বাসলে এ জায়গায় এসে দাঁড়াতে পারতামনা। আমার জাতির লোকজন আমাকে ভালোবাসে। তিন পার্বত্য জেলার সবাইকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি উপজাতি এ জন্য গর্ববোধ করি। আমি চাকমা ও চাকমা ভাষার ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করি।

Exit mobile version