পাত্রীর পরিচয় গোপন রাখতে পারলেন না মুজিবুল হক
ডেস্ক নিউজ:
জীবনের ৬৭টি বসন্ত পেরিয়ে বিয়ে করার কথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তাও যেন-তেনভাবে নয়, প্রেমের পরিণয়ে তারা আগামী ডিসেম্বরে জুটি বাঁধছেন। প্রেম, পরিণয় আর বিয়ের কথা মুজিবুল হক নিজ মুখেই জানিয়েছেন। তবে তিনি কনে সম্পর্কে সবাইকে কিছুটা রহস্যে রেখেছেন। বিশেষ করে প্রেমিকা পাত্রীর বয়স।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের নিজ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ, বিয়ে করতে যাচ্ছি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিয়ের অনুষ্ঠান ঢাকা ও কুমিল্লায় হবে। তিনি জানান, কন্যা মাস্টার্স শেষ করেছেন। আইনে উচ্চতর ডিগ্রি নিচ্ছেন। দেখতে ফর্সা। বাড়ি কুমিল্লায়। তিন বছর ধরে তারা পরিচিত।
বিয়ের সিদ্ধান্ত বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘দেখলাম মানুষের জীবনের শেষ বয়সে একজন সঙ্গিনী দরকার। পরবর্তী জীবনে যাতে নিঃসঙ্গ না থাকতে হয়, জীবনটা ভালভাবে কাটানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
বিয়ের পর এই নবদম্পতি রাজধানী ঢাকায় স্থায়ীভাবে সংসার জীবন এগিয়ে নিবেন বলেও জানান। পাত্রীর নাম, বয়স ও বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাইলে মুজিবুল হক মুচকি হাসেন। আর বলেন, সময় হলেই সব দেখতে পাবেন। তবে মেয়ে পর্দানশীল। পড়া-লেখার কথা শুনে নিশ্চয় বয়সও আন্দাজ করতে পারছেন।
হবু বউয়ের পরিচয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গ্রামের সহজ-সরল সাধা-সিধে মেয়ে, ধীরে ধীরে সব জানতে পারবেন। মাস্টার্স পাস করে আইনেও পড়েছেন, তো বয়স বুঝতেই পারছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাত্রী পরহেজগার, বোরকা ছাড়া চলে না। ভাল পরিবারের মেয়ে। তার বাড়ি কুমিল্লায়। এর বেশি বলা যাবে না।’ কোনো ঘটক বা কারো সহযোগিতায় বিয়ে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ঘটক না, পাত্রীর সঙ্গে আমার তিন বছর ধরে পরিচয়, পরিচয়ের সূত্র ধরেই আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি।’
তিন বছরের পরিচয়কে প্রেম বলা যায় কিনা এমন প্রশ্নে মুজিবুল হক বলেন, ‘তিন বছর থেকে শুধু পরিচয়। এই পরিচয় থেকেই বিয়ের সিদ্ধান্ত। এর বেশি কিছু না।’
এদিকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের হবু স্ত্রীর পরিচয় ইতিমধ্যেই প্রকাশ হয়ে গেছে। জানা গেছে, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ১০ নং গল্লা ইউনিয়নের মিরাখোলা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান মুন্সির মেয়ে হনুফা আক্তার রিতাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন সাতষট্টি বছর বয়সি রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। পাত্রী হনুফা আক্তার রিতার বয়স ২৭ বছর। পাত্র রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বয়স ৬৭ বছর। তাদের বয়সের ব্যবধান ৪০ বছর।
হনুফা আক্তার রিতা তাঁর সাত ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। তাঁর মায়ের নাম জোছনা বেগম। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মবিন জানান, রিতা আমাদের চাচাতো বোন। সে এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে পড়ালেখা করতে ঢাকায় যায়। মন্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের খবর শুনে আমাদের গ্রামের সবাই খুশি। মন্ত্রী আমাদের গ্রামের জামাই হতে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিতার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে বিয়া হইতেছে ভাল কথা, তবে মাইয়াডার সঙ্গে জামাইয়ের ৪০ বছরের বয়সের ফারাক- এইডা কেমন কথা।
গ্রামের ষাটোর্ধ জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি এই বয়সে নাতি নাতনির মুখ দেখেছি। দুই দিন পর আমাদের কবরে যাওয়ার সময় হয়ে যাবে। আর এই সময় আমাদের ছোট মেয়েটাকে বিয়ে করে মন্ত্রী সংসার করবেন। এই খবর আমাদের কাছে যেমন খুশির, তেমনি হাসির খোরাকও বটে।
এদিকে, হনুফা আক্তার রিতার বড় বোন হামিদা আক্তার বলেন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের মত একজন বড় মনের মানুষ আমাদের মত সাধারণ পরিবারে বিয়ে করছেন এটাই অনেক বেশি, এখানে বয়স কোন সমস্যা নয়। এ ছাড়া যারা বিয়ে করে সংসার করবেন তারা যদি সুখী হন তাতেই আমাদের সুখ।