ভাঙা ঘরে পানছড়ির ময়নার দুর্বিষহ জীবনযাপন

fec-image

মনোয়ারা বেগমকে এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনরা ময়না নামেই চেনে। ময়নার স্বামী শামসুদ্দিন মারা গেছে বছর তিনেক আগে। ছেলে আবদুর রহিম মানসিক ভারসাম্যহীন। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার ৫ নম্বর উল্টাছড়ি ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের একটি জরাজীর্ণ ঘরে একাকী বাস করে ময়না। ময়নার বয়স এখন ৫২।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরনো টিনের চালের জরাজীর্ণ একটি ঘরের একদিকে মাটি বাকী তিন দিকে পুরনো বাঁশের বেড়া ও ভাঙা বাঁশের খুঁটির উপর দাড়িয়ে আছে ময়নার ঘর। ঘরের টিনের ছাউনিতে রয়েছে শতাধিক ফুটো। বৃষ্টিতে সারারাত ধরে গামলা, বালতি, বদনা ও মগ বসিয়ে পানি আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা ময়নার। নিজেও ভেজে ঘরের কাপড়-চোপড়, কাঁথা-বালিশও বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার। ঘরের মেঝেও পানিতে ভিজে হয়ে আছে স্যাঁতস্যাঁতে।

বিধবা ময়না সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরের জন্য কয়েকবার আবেদন করেছেন। কিন্তু একটি ঘরের সহায়তা নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। পুরনো কাপড় আর জমানো পলিথিন দিয়ে চালের ফুটো বন্ধ করতে করতে সে এখন ক্লান্ত। মনের দুঃখে মেঘলা আকাশ দেখলেই বৃষ্টির পানি আর চোখের পানিতে একাকার। সারারাত বৃষ্টির পানির সাথে লড়াই করতে করতে সর্দি আর কাশিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

আর কতো মেঘের পানি খাবে বলে ময়নার কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। ময়নার দাবি তাকে দেখাশুনার কেউ নেই। ঘরটিও জরাজীর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর পেলে বৃষ্টির পানির সাথে যুদ্ধ করা থেকে অন্তত রেহাই পারে বলে তার আকুতি।

ময়না একটি সরকারি ঘরের প্রাপ্য দাবীদার বলে জানালেন প্রতিবেশী রৌশনারা বেগম, হেলেনা বেগম ও খোরশেদ আলম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ময়না আসলেই অসহায়। বিধবা এই অসহায়কে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর প্রদানের জন্য তিনি প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দুর্বিষহ জীবনযাপন, পানছড়ি, ভাঙা ঘর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন