ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা বলায় চ্যাম্পিয়ন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা বলায় চ্যাম্পিয়ন। তাদের কিছু মিডিয়ার কাজই হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচার। বাংলাদেশের মিডিয়ায় সত্য প্রচারের মধ্য দিয়ে এর জবাব দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাঙামাটির বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামর সব সহিংসতার মূল কারণই চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি বন্ধ করা না গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতা বন্ধ করা যাবে না। কোট-স্যুট পরা লোকেরাই বড় বড় কথা বলে এসব জিইয়ে রাখে। কোনো অবস্থাতেই এসব চাঁদাবাজি সন্ত্রাস বরদাশত করা হবে না। কঠোর হাতে এদের দমন করা হবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর লুট হওয়া সব অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব না হওয়ায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোন অবস্থায় দুনীতি টলারেট করা হবে না। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটালে তাকেও আমরা ছাড়বো না।
সেনাবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, এখানে বড় সমস্যা হলো চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে না পারলে সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।
উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন পার্বত্য উপদেষ্টা। এখানে এসে দেখলাম এখানকার উন্নয়ন শহর কেন্দ্রিক। এখানে বনায়ন যেগুলো ছিলো বনায়ন পুড়ে মরভূমি করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে কি করা যায় চিন্তা-ভাবনা করছি।
উপদেষ্টা বলেন, জীবন-মানের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। টাকাটা যেন গরীবের হাতে পৌছে। টাকাটা দিয়ে তারা আয়ের উৎস সৃষ্টি করতে পারে। দীঘিনালা-বাঘাইছড়ি উপজেলায় স্থানীয়দের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সবজি চাষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সেখানে বর্তমানে অনেক গাছ-পালা হয়েছে। কিন্তু সেখানকার অনেক স্থানে জুম চাষের কারণে মরভূমি এলাকায় পরিণত হয়েছে। তাদের সজাগ করতে হবে। আর অত্র এলাকায় চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাঘাইহাটে আগে বিজিবি ক্যাম্প ছিলো না। এখন বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। একদিনে কোন সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অস্ত্রের চোরাচালান এদিকে হচ্ছে না এটা অন্যদিকে হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার পাহাড় এবং সমতল কোথাও বৈধ নয়। ০৫আগষ্ট আন্দোলনে অনেক অবৈধ অস্ত্রের ব্যহার হয়েছে। এসব অস্ত্র উদ্ধার হয়ে গেলে অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও আধুনিক করা হবে। যারা বড় বড় কথা বলে তারাই মারামারি শুরু দিয়েছে। এখানে বসে স্যুট-টাই পড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর ওখানে সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে। তারা চাঁদাবাজি করছে। তারা সাধারণ মানুষ মেরে রাজনীতি করছে। আর তাদের সন্তানরা বাইরে লেখা-পড়া করছে। এটা যেন আর না হয়। সরকার এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে।
এসময় পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, বিজিবি সদর দপ্তর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সোহরাব হোনে ভূঁইয়া, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেনস্ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেল কামাল, পিলখানা ঢাকার ব্যুরো চীফ অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইয়াছির জাহান হোসেন, স্বারাষ্ট্র মন্ত্রষালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোহাম্মদ সাইফুর ইসলাম, পূর্ত বিভাগের উপ-মহাপচিালক কর্ণেল সোহেল আহমেদ, সংগঠন ও ব্যবস্থাপনার জি পরিচালক লে.কর্ণেল মো. বাতিফ সিদ্দিকী, ডিজি বিজিবি’র পিএস টু লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মাশরুফী, এনএসআই’র অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আবু নোমান সরকারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট ব্যাটালিয়ন (৫৪বিজিবি) পরিদর্শন করেন