ভারতের সাত রাজ্য দখল নিয়ে যা জানালেন সাবেক মেজর জেনারেল এ এল এম ফজলুর রহমান

fec-image

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কমিশনের প্রধান এবং ডিজি বিডিআর মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এ এল এম ফজলুর রহমান গত ২৯ এপ্রিল এক পোস্টে বলেছেন, “ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিৎ হবে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেয়া।

এব্যাপারে চীনের সাথে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা। তার এ বক্তব্য নিয়ে দেশের মধ্যে , ভারত এবং পাকিস্তানে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্স প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল এ এল এম ফজলুর রহমান সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সরকার তা সমর্থন করে না বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কিন্তু তারপরেও এ ঘটনার পর ভারতীয় মিডিয়ায় প্রবল প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ প্রকাশ করে। ভারতীয় সকল মিডিয়া প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এ পোস্ট নিয়ে প্রতিবেদন ও টকসো আলোচনায় হয়। একইসাথে পাকিস্তানে এ বক্তব্যকে সমর্থন করে গণমাধ্যামে নানা রিপোর্ট ও প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

এর প্রেক্ষিতে জেনারেল ফজলুর রহমান শুক্রবার (২ মে) তার বক্তব্য একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন , তার বক্তব্যটি জনসাধারনের সুবিধার জন্য নিম্নরুপ…

“ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিৎ হবে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেয়া। এব্যাপারে চীনের সাথে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।”

একথা আমি বলেছি। কেন বলেছি তার বিশ্লেষণ হলো ভারতের বিজেপি সরকারের সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে যে ভারতে ” এন আর সি” বা নাগরিক পুঞ্জি করে ভারতের মুসলমানদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে আবদ্ধ করে মুসলমানদের হত্যা করা। কিংবা ভারতের মুসলমানদের বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে পুশ করে পাঠিয়ে দেয়া। এই পরিকল্পনা ভারত নিয়েছে ইসরাইলের কাছ থেকে। আপনারা লক্ষ্য করছেন কিভাবে ভারতে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে।

এই উপমহাদেশে মূলত দুটি মুসলমান দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। মালদ্বীপ এতো ছোট আর সামরিক ভাবে দুর্বল যে ভারতে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার কোনো দায়িত্ব মালদ্বীপ পালন করতে পারবেনা। তাহলে ভারতে মুসলমানদের জান এবং মাল রক্ষার মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে। এইতো কয়দিন আগে ভারতে মুসলমানদের ওকফ সম্পত্তির সবটাই বিজেপি সরকার কেড়ে নিয়েছে।

আর কিছুদিনের মধ্যেই ভারতে মুসলমানদের মুর্দাকে কবর দেওয়ার জায়গা পাওয়া যাবেনা। ভারতে কোনো মাদ্রাসা , মসজিদ থাকবেনা। কারণ শত শত মসজিদ , মাদ্রাসা ওয়াকফ জমির উপর অবস্থিত এবং ওয়াকফের টাকায় চলে। ওয়াকফ না থাকলে এইসব মসজিদ থাকবেনা। মাদ্রাসাও থাকবেনা। ইতিমধ্যেই ভারতের সরকার রাস্তা এবং খোলা স্হানে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করেছে। অথচ হিন্দুরা রাস্তায় হোলি খেলছে এবং রাস্তায় দলবেঁধে অনুষ্ঠান করছে বাধাহীন ভাবে।

এবারে নরেন্দ্র মোদী সরকার পাহেলগামে নিজেরা পর্যটকদের হত্যা করে পাকিস্তানের উপরে দোষ চাপিয়ে পাকিস্তান আক্রমণ করে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছে। যদি ভারত পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয় তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ভারতের হুমকি কি পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে কল্পনা করতে পারেন! তাই পাকিস্তানকে সামরিকভাবে রক্ষা করা এখন আমাদের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

এর মানে এই নয় যে আমাদেরকে পাকিস্তানের বন্ধু হতে হবে। এটা একটা স্ট্রাটেজিক বিষয়। পারস্পরিক নির্ভরতার বিষয়। যদি ভারত পাকিস্তানকে আক্রমণ করে তবে চীনের সঙ্গে মিলে ভারতের উত্তর পূর্ব সাত রাজ্যকে দখলে নেয়া এটা ভারতের পাকিস্তান আক্রমণের রিজিওনাল ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া। যাতে ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করতে উৎসাহিত না হয়।

যারা সামরিক স্ট্রাটেজি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন তারা অযথা এমন বিষয়ে মন্তব্য করে সময় নষ্ট করবেননা দয়া করে। এই উপমহাদেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যা ঘটছে এর জন্য দায়ী ভারত। বাংলাদেশ বলেন পাকিস্তান বলেন আমরা কারো দেশ দখল করে দেশের সীমানা বৃদ্ধি করতে চাই না।

আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই নিয়ে ব্যস্ত। এই লড়াইয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে মাঠে নামিয়েছে ভারত। শেখ হাসিনাকে দিয়ে বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনস্ট করতে চায় কে? ভারত।

এর পরেও কি আমরা হাত গুটিয়ে বসে থেকে নিজের অস্তিত্ব নিজেরা ধ্বংস করবো? আমাদের সতেরো কেটি মানুষ আছে। আমরা আমাদের শত্রুকে অবশ্যঅবশ্যই ধ্বংস করতে সক্ষম। আসুন আমার সাথে শপথ নেই। লড়বো শত্রুকে ধ্বংস করবো এবং গাজি হয়ে ফিরবো ইনশাআল্লাহ।

পরিশেষে বলবো আমার কাছে সব চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই উপমহাদেশে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করা। মুসলমান বান্ধব মানুষদের স্বার্থ রক্ষা করা। কে কি ভাবলো তা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন