parbattanews

ভারী বর্ষণে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় যোগাযোগ বিঘ্নিত

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবান জেলা শহরসহ চার উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। গত সোমবার থেকে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে মানুষের।

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিনদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে অতিক্রম করছে। এছাড়া সড়ক ভেঙ্গে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জেলার বাইশারী-ঈদগাঁও, নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনীয়া, সদর-সোনাইছড়ি, লামা-আলীকদম এবং থানচি উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। বুধবার সারাদিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় রাতে আরো নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।

এর আগে গত মঙ্গলবার বন্যার পানির স্রোতে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বড়ুয়া পাড়ায় সুবাস বড়ুয়ার ছেলে অশীষ বড়ুয়া (১৬) এর মৃত্যু হয়েছে। এরআগের দিন তুমব্রু খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আব্দুর রহমান (৬)নামে এক শিশুর লাশ।

জানা গেছে, বান্দরবানে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে গত তিনদিন ধরে। এতে জেলার নিম্মাঞ্চল প্লাাবিত হয়ে বীজ তলা, খামার সহ বসত ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার সাত উপজেলায় শতাধিক পাহাড় ধস এবং বেশকিছু কাচা ঘর ভেঙ্গে গেলেও বড় ধরনের কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা ফেরদৌস জানান, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উপজেলার কিছু এলাকায় পাহাড় ধস ও যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তবে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।

সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এ্যানিং মারমা, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, টানা বৃষ্টিতে ইউনিয়নের নিম্ম এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি পাহাড় ধস ও বেশ কিছু কাচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। পাহাড়ি ঢলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সোমবার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, ভারী বৃষ্টিপাতে ঈদগাও-ঈদগড় ও বাইশারী সড়ক তলিয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলা সদরে যাওয়ার পুরনো রাস্তাটিও চলাচল অনুপযোগী। এই অবস্থায় বাইশারী ইউনিয়নের মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এদিকে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন জরুরী সভা করেছে। দূর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বৃষ্টিতে উপজেলাগুলোতে পাহাড় ধসে সড়ক, ঘরবাড়ি এবং বৃষ্টিতে সড়ক ধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড় ধসের ঝুকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দূর্যোগকারীদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে খুলে দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

Exit mobile version