parbattanews

ভূমি কমিশন কার্যকর হলে পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত হবে- ড. গওহর রিজভী

15126179_10154231557082725_1107378645_o

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী বলেছেন, কিছুদিন আগে পার্লামেন্টে ল্যান্ড কমিশন আইন পাশ হয়েছে, আমি আশা করি দ্রুত কার্যকর হবে। এতে বিরোধ মিটিয়ে এই অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত হবে।

গওহর রিজভী মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলার সাজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিজিটাল স্কুল নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন শেষে একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, যখন কোনো দেশ এগিয়ে যায় তখন দেশে সকল অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে হয়। তা না হলে উন্নয়ন সম্পূর্ণ হয় না। সেকারণেই পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন জরুরী।

গওহর রিজভী বলেন, আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায়ই আসি। যখন আমার বয়স ১২ বছর তখন থেকে আসা যাওয়া শুরু করেছি। তখন যে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেখেছি তার চেয়ে এখন অনেক পরিবর্তন দেখি। চারিদিকে অনেক উন্নয়ন দেখি। কিন্তু আমাদের আরো জোর দিতে হবে।

এই ডিজিটাল স্কুলকে একটি অসাধারণ উদ্যোগ আখ্যা দিয়ে তিনি আরো বলেন, এখানকার বাচ্চাদের শিক্ষা ও নিউট্রিশনের উপর জোর দিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদারএডব্লিউসি, পিএসসি, খাগড়াছড়ি জেলার সাংসদ কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা এমপি, রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রানালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি, রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের কমাণ্ডার ব্রি. জে. সানাউল হক পিএসসি, গুইমরারা সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রি. জে. মুহম্মদ কামরুজ্জামান এনডিসি. পিএসসি, খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রি. জে. স ম আহবুব উল আলম এসজিপি, পিএসসি,  সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং স্বগোত্রীয় সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ সাজেক ছিল লোক চক্ষুর অন্তরালে লুকায়িত এক অপরূপ জনপদ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা হয়ে উঠেছে পর্যটনের এক অসীম সমাহার। যথাক্রমে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সাজেক রুইলুই পাড়া পরিদর্শনের ফলে অত্র এলাকা হয়ে উঠেছে স্বচ্ছল, উন্নত জীবনমান সম্পন্ন এবং আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

সব কিছুতে পূর্ণতা আসলেও পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সাজেকের শিশুরা। অতঃপর দেড় শতাধিক স্কুল ও গ্রন্থাগার পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় দেড় লক্ষাধিক উপজাতি ও বাঙালীকে শিক্ষার আলো বিতরণে পারঙ্গম খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রি. জে. স ম আহবুব উল আলম এসজিপি, পিএসসি স্বপ্রণোদিত উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসাবে শুরু করেন ডিজিটাল স্কুল নির্মাণের কাজ।

আগস্ট ২০১৬ মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, এনডিসি ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম এবং বহুমাত্রিক সচেতনতা কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। সার্বিক কর্মকাণ্ড শেষে ২২ নভেম্বর সাজেকের রুইলুই পাড়ায় ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম এবং বহুমত্রিক সচেতনতা কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

এই প্রজেক্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চাহিদা পুরণের জন্য সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিঙ্গার প্রিন্টের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের হাজিরা গণণার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পার্বত্য জেলা পরিষদ রাঙামাটির অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই স্থাপনা ও সুবিধাদি ব্যবহার করে এলাকার বয়স্ক লোকের জন্য নির্মল বিনোদন এবং বহুমুখী সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই প্রোগ্রামের আওতায় যেসকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে তার মধ্যে রয়েছেঃ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে সকল চাষাবাদ পদ্ধতি, পাহাড়ে নিরাপদ পানি সংরক্ষণের উপায়, স্বাস্থ্য সচেতনতা, বৃক্ষরোপন ও পরিবশে বান্ধব চাষাবাদ, মৎস ফলজ চাষ ও পশু পালন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ, উদ্যোক্তা তৈরি ইত্যাদি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের পক্ষে থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে দেড় শতাধিক স্কুল ব্যাগ, বই ও লেখার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমাণ্ডার পার্বত্যাঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয় চিত্র তুলে ধরেন।

এই পাইলট প্রকল্পটির পদ্ধতি অনুসরণ করে ভবিষ্যতে দূর্গম ও গহীন অরণ্যে শিক্ষক বিহীন এলাকায় শিক্ষার আলো বিচ্ছুরণে সফলতা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন  উপস্থিত সরকারী প্রতিনিধিবৃন্দ।

Exit mobile version