‘ভূষণছড়া গণহত্যা’ বিচারের দাবিতে নাগরিক পরিষদের মানববন্ধন

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্যদিয়ে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পালিত হয়েছে ভূষণছড়া গণহত্যা দিবস। ১৯৮৪ সালের এই দিনে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএসের সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনীর সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া চার শতাধিক নিরীহ বাঙালি নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যার পরবর্তী দীর্ঘ ৩৯ বছরের বিচার পায়নি নিহতদের স্বজনরা। নিহতের স্মরণে প্রতি বছর এই দিনটিতে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আসছে পাহাড়ের বিভিন্ন সংগঠন।
বুধবার (৩১ মে) সকালে রাঙামাটি বনরূপা মসজিদ মার্কেটের সামনে বিভিন্ন ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে অনুষ্ঠিত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ পিসিএনপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী জালোয়ারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ পিসিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, মহাসচিব আলমগীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদ, অর্থ সম্পাদক লোকমান হোসেন, রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দীক, প্রচার সম্পাদক হুমায়ন কবির, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. হাবীব আজম, পৌর সভাপতি পারভেজ মোশারফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু, সাপছড়ি ইউনিয়ন সভাপতি রাজিবুল ইসলাম রিয়াজ প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভূষণছড়া গণহত্যাসহ অসংখ্য বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন হত্যাকেণ্ডের বিচার করা হয়নি। উল্টো পাহাড়ে প্রতিনিয়ত অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ পাহাড়ি ও বাঙালি উভয়ই এই সকল সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হত্যা, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ। তাই পাহাড়ে কাঙ্খিত শান্তির সুবাতাস ফিরিয়ে আনতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এখনই রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, কাগজে কলমে শান্তিবাহিনী না থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর দৌরাত্ম্য থেমে নেই। তাদের হাতে বাঙালিরা যেমন হত্যার শিকার হচ্ছে, তেমনি নিহত হচ্ছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষজন। পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ’র সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠীকে কোণঠাসা করে রেখেছে। তারা এখন পাহাড়ের সাধারণ মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। কখন কার উপর তারা আক্রমণ চালাবে তা নিয়ে আতঙ্কে থাকে প্রতিনিয়ত পাহাড়ের সাধারণ মানুষ।
তাই পার্বত্য এলাকায় শান্তি আনয়নের জন্য অবিলম্বে ভূষণছড়া গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসী কর্তৃক সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার ও প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্প পুনর্স্থাপনে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দরা।