মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে উপকূলীয় বন বিভাগের মালিকানাধীন সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে সামুদ্রিক বালু উত্তোলনের চেষ্টা করে যাচ্ছে কতিপয় প্রভাবশালীরা!

সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে বালু উত্তোলনের জন্য গত কয়েক দিন পূর্বে বড় আকারের পাইপ বসালেও ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বালু উত্তোলের কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেননি।

এদিকে উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা বনবিট কর্মকর্তা মো. মোবারক বলেন, গতকাল পাইপ বসানোর সময় বাধা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলনে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় বন বিভাগের নির্দেশ মানছেন না। তিনি এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি মোখিক ও লিখিতভাবে অবহিত করেছেন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলাও দায়ের করবেন বলে জানান।

স্থানীয়রা জানান, বঙ্গোপসাগরের চ্যানেল থেকে থেকে বালু উত্তোলন করার কোন নিয়ম না থাকলেও কতিপয় প্রভাবশালীরা একজোট হয়ে বালু উত্তোলনের অপচেষ্টা চালিয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে।

সরেজমিনে দেখাযায়, কক্সবাজার জেলার নদীর তীরবর্তী দুই উপজেলা পেকুয়া ও কুতুবদিয়ার মধ্যবর্তী স্থান বঙ্গোপসাগরের মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করার অপচেষ্টা দৃশ্যমান। বন বিট কার্যালয়ের সামনে মগনামায় নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধও রয়েছে। এছাড়াও বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনাও রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এসব স্থাপনা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কার্যক্রম শুরু হলে নষ্ট হবে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। এর ফলে ধ্বংস হবে সামুদ্রিক খনিজসম্পদ, সামুদ্রিক প্রাকৃতিক জীবসম্পদ, মৎস্য, চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, ডলফিন, কাঁকড়া, সি-উইড, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী, বিভিন্ন জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজনন-আবাসস্থল। জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের ইকো-সিস্টেমকে ক্ষতিসাধন করে রাষ্ট্রের সামুদ্রিক জলজ সম্পদের ক্ষতিসাধন করা হবে। এছাড়া সমুদ্রতল, জলরাশি, জলস্রোত, বায়ু, সামুদ্রিক প্রবাল প্রাচীরও দূষিত হবে।

মগনামার ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মগনামা বরইতলী সড়কের কার্যাদেশপ্রাপ্ত এক ঠিকাদার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই মগনামা বন বিট কার্যালয়ের সামনে বালু উত্তোলনের জন্য পাইপলাইন বসিয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবেন।

পেকুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার রফিকুল ইসলাম জানান, মগনামার বন বিট কার্যালয়ের সামনে সাগরের মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি।

এ ব্যাপারে উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা ও চনুয়া বন বিটের রেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বন বিভাগের জায়গার উপর দিয়ে কাউকে সাগর থেকে বালু উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হবেনা। এ বিষয়ে পেকুয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করা হয়েছে। কালকের মধ্যেই অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন