মধ্যপ্রাচ্যে করোনা আতঙ্কে নেই কোলাকুলি, মসজিদগুলো মুসল্লি শূন্য
নেই কোন হুক্কার আড্ডা, রাস্তাঘাট একেবারে জনমানবশূণ্য। একই অবস্থা লক্ষ্য করা যায় মসজিদ এবং শপিংমলগুলোতে।মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে উড়ছে ড্রোন। ড্রোন থেকে মানুষকে স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করে প্রচার করা হচ্ছে বিভিন্ন বার্তা।
পারস্য উপসাগরীয় উপকূলবর্তী দেশগুলোর চালচিত্র প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এভাবেই পাল্টে দিয়েছে । পারস্য উপসাগরীয় ছয়টি দেশে এ পর্যন্ত মোট ৮৭০ জন করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়েছেন। স্বস্তির বিসয় হলো এ পর্যন্ত এসব দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয় নি।
বলা হচ্ছে- পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে যেসব মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই প্রতিবেশী ইরান থেকে এসেছেন। এ পর্যন্ত ৭৩০ জনের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ইরানে।
জনস্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকির মুখে অনুভব করার কারণে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার এবং ওমান নাটকীয় এবং শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।
দুবাইয়ের অধিবাসী আমাল আল-হাশেম জানান, “যেন মনে হচ্ছে আজ সপ্তাহের শেষ দিন, যেন কোনো কাজ নেই; কোথাও কোনো ব্যস্ততা নেই।” ১৫ বছর বয়সী এ কিশোর যখন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন তার আশপাশের রাস্তা ছিল একেবারে মরুভূমির মতো জনমানবশূণ্য। যেদিন তিনি কথা বলছিলেন সেদিন ছিল পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে সপ্তাহের শুরুর দিন। স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি কর্মব্যস্ত হওয়ার কথা।
করোনায় জনজীবন বিপর্যস্ত উপসাগরীয় দেশগুলোতে
তবে পারস্য উপসাগরীয় ৬টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে শক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে কুয়েত। পুরো দেশকে বলা চলে অবরুদ্ধ অথবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইটালির পরে কুয়েতই এ ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কুয়েত সিটির প্রধান বিমানবন্দরের সড়ক একেবারেই শূন্য। সেখানে কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট নেই। আকাশে ড্রোন উড়ছে আর তা থেকে বিভিন্ন ভাষায় সতর্কমূলক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। লোকজনকে তাদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
কাতারের রাজধানী দোহায় যেসব মার্কেট বা শপিংমল ব্যস্ত থাকে, ব্যস্ত থাকে পর্যটকদের ভিড়ে- আজ অনেকটাই নীরব। একই অবস্থা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের শপিং ডিস্ট্রিক্টে।
পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে সিনেমা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্র। যেসব রেস্টুরেন্ট বা অবকাশ কাটানোর কেন্দ্রে ভিড় লেগেই থাকতো সেখানকার ক্যাফেগুলোতে বন্ধ করা হয়েছে হুক্কা খাওয়ার ব্যবস্থা। কাছ থেকে দেখলে মনে হবে ছয়টি দেশের মানুষজন যেন অন্য কোথাও চলে গেছেন। পড়ে আছে দেশের শূণ্য কাঠামো।