parbattanews

মহানবমী’র সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মূখর মানিকছড়ি’র পূজামন্ডপ

বৈশ্বিক মহামারী করোনায় সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী পরিবেশে এবার পার্বত্য জনপদ মংরাজ আবাসস্থল মানিকছড়িতে পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সামাজিক বিধিনিষেধ ও বৃষ্টিপাতে মহাষষ্ঠী-মহাষ্টমীতে পূজামন্ডপে দর্শনার্থী কম হলেও মহানবমীর বিকাল থেকেই পূজামন্ডপে প্রচুর দর্শনার্থী ও জনপ্রতিনিধি’র পদচারণায় মূখরিত হয়ে উঠে প্রতিটি মন্দিরস্থল। নেতাদের দান-অনুদানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন পূজা উদযাপন কমিটি।

জানা গেছে, প্রয়াত মংরাজা মম্প্রুসাইন বাহাদুর এর হাত ধরে ১৯৭৭ সালে প্রথম মানিকছড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশ্যামা কালী মন্দির। সেই থেকেই মহা ধুমধাম আয়োজনে এখানকার সনাতন সম্প্রদায়ের ধর্মালম্বীরা পালন করে আসছিল দুর্গাপূজা। পরবর্তীতে এ মন্দিরে পূজারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় জনবহুল জনপদ তিনটহরী ও একসত্যা পাড়ায় স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় আরো দুইটি মন্দির। পালিত হতে থাকে দুর্গাপূজাসহ নানাধর্মী উৎসব।

শারদীয় দুর্গাপূজায় এবার“ দিগন্তের ঐ কাশবন পেরিয়ে দোলায় চড়ে, শিউলী ঢাকা পথে স-পরিবারে মর্ত্যলোকে আসেন মহেশ্বরী-মহামায়া, সর্বকল্যাণদায়িনী, জগৎ জননী মা দুর্গা”। বৃষ্টিস্নাত মেঘাছন্ন আকাশে মাঝারী ও ভারী বৃষ্টিপাতে ধর্মীয় উৎসবের শুরুতে কিছুটা ভাটা পড়লেও নবমীর বিকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে পূজারী, দর্শনার্থী ও জনপ্রতিনিধিদের পদভারে মূখরিত হতে থাকে পূজাস্থল।

২৫ অক্টোবর বিকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী রাজশ্যামা কালি মন্দির পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি দুর্গাদেবীর প্রার্থনায় শরীক হন এবং পূজা উদযাপন কমিটিকে নগদ ১০ হাজার টাকা
অনুদান প্রদান করেন। এ সময় মন্দির কমিটি ও পূজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি বাদল কান্তি সেন ও সাধারণ সম্পাদক তুষার পাল চেয়ারম্যানকে অভিনন্দন জানান।

পরে সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও খাগড়াছড়ি সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পক্ষে সনাতন সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভুতির বার্তা নিয়ে মন্দিরে মন্দিরে ছুটে যান এবং এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন এর পক্ষ থেকে নগদ অর্থ অনুদান প্রদান করেন।

এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাবুল, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ফারুক, মো. আবুল কালাম আজাদ, যুবলীগ সভাপতি মো. সামায়উন ফরাজী সামু, ছাত্রলীগ সভাপতি মো. জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক চহ্লাপ্রু মারমা নিলয়সহ উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দলে দলে মণ্ডপে মণ্ডপে অভিবাদন জানাতে উপস্থিত হন। এতে পূজা উদযাপন কমিটি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। পরে রাত সোয়া ৮টায় জেলা পরিষদ সদস্য মংশেপ্রু চৌধুরী অপু পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন।

রাজ শ্যামা কালী মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তুষার পাল বলেন, বৈশ্বিক মহামারী
করোনায় আমরা সরকারী বিধি নিষেধ মেনে সকলের সহযোগিতায় অনাড়ম্বর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন
করছি। সভাপতি বাদল কান্তি সেন বলেন, উপজেলার প্রাচীন এই রাজশ্যামা কালী মন্দিরটি ১৯৭৭ সালে তৎকালীণ মংরাজা মম্প্রুসাইন বাহাদুর এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত। করোনার মহামারীতে অনাড়ম্বর পরিবেশ হলেও প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতায় আমরা
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন করতে পেরে সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Exit mobile version