মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

fec-image

 

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর সামরিক অভিযান চালিয়ে ঘুমন্ত ও নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যায় মেতে ওঠে।

পাকিস্তানি বাহিনীর কাপুরুষোচিত আক্রমণ ও গণহত্যার পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাঙালিদের অভিন্ন অভিপ্রায় হয়ে ওঠে স্বাধীনতা অর্জন। সশস্ত্র লড়াই ও প্রতিরোধে আগুয়ান হয় এ দেশের মুক্তিকামী জনতা। শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় আসে।

বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় এক নতুন মানচিত্র—স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে শোষিত ও বঞ্চিত বাঙালিরা পায় পরম আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার স্বাদ।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে।

রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।’
দেশে ও প্রবাসে বসবাসকারী সব বাংলাদেশি নাগরিককে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৬ বছর দেশের মানুষ এই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বৈরাচারী শাসক জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।

ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থান দেশের মানুষকে স্বৈরাচারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে আরো উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।’
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

আজ সরকারি ছুটির দিন। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।

দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের বাইরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন