মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকৃত ৯৬ জলদস্যুর জামিন

fec-image

গেলো বছরের ২৩ নভেম্বর মহেশখালীতে অস্ত্র, গুলাবারুদসহ  ১২ বাহিনীর আত্মসমর্পণকৃত ৯৬জন জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগরের জামিন দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। অন্য কোন মামলা না থাকলে বুধবার তারা জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আদালতে আসামিদের পক্ষে জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল এইডের আইনজীবী মোকতার আহমদ, সেলিম উদ্দিন রাজু, রহমত উল্লাহ, রবিউল হোসেন, মোশারফ হোসেন টিটু, নুর সোলতান, নুরুল হুদাসহ অন্তত ১৫জন আইনজীবি উপস্থিত ছিলেন।

আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে মহেশখালীর আইয়ুব বাহিনীর প্রধান আইয়ুব আলী, সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু শামা, কালারমারছড়ার আলোচিত জিয়া বাহিনীর প্রধান জিয়াউর রহমান জিয়া, তার বাহিনীর মানিক, আয়াতুল্লাহ, আবদুস শুকুর, সিরিপ মিয়া, একরাম ও বশিরসহ অন্তত ১৫, চেয়ারম্যান তারেক শরীফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত কালা জাহাঙ্গীর বাহিনীর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য আবুল, সোনা মিয়া, জমির উদ্দীনসহ প্রায় ১৫ জন, মহেশখালীর নুনাছড়ির মাহমুদুল্লাহ বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ আলী, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড বদাইয়াসহ ১৫ জন, ঝাপুয়ার সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ-উদ-দৌলাহ, নলবিলার মুজিব বাহিনীর প্রধান মজিবুর রহমান প্রকাশ শেখ মুজিব এবং কুতুবদিয়ার লেমশিখালীর কালু বাহিনীর প্রধান পিচ্চি কালু, জাফর আলমসহ ১৫-২০ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর রয়েছে।

২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়।

ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপির হাতে জলদস্যুরা ১৫৫টি দৈশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৭৩ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়।

তার আগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর র‌্যাবের মাধ্যমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। এরপরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অনেক শীর্ষ দস্যু ও অস্ত্র কারিগর। যার কারণে বিভিন্ন পাহাড় ও সাগর উপকূলে অভিযান বৃদ্ধি করে পুলিশ। অভিযানের মুখে আবারও আত্মসমর্পণ করতে আগ্রহ প্রকাশ জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগররা।

সর্বশেষ স্বাভাবিক পথচলা ও শান্তিময় জীবনের প্রত্যাশায় ৯৬ জন জলদস্যু আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পন করে।

এসব জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরকে আত্মসমর্পণকালে নগদ ৫০ হাজার টাকা, পরে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব ত্রাণ তহবিল থেকে এক লাখ টাকা করে ৯৬ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্শনায় জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ইতোমধ্যে খাস জমি বরাদ্দ দেয়ার মাধ্যমে জলদস্যুদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছেন।

তারই ধারাবাহিকতায় পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহতাসেম বিল্লাহর সাথে বৈঠকের মাধ্যমে করণীয় ঠিক করেছেন আত্মসমর্পন প্রক্রিয়ার সমন্বয়ক সাংবাদিক এমএম আকরাম হোসাইন। ওই বৈঠকে থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার, এসিল্যান্ড মিখি মার্মা উপস্থিত ছিলেন।

একইভাবে চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া প্রশাসনের সাথে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছেন এমএম আকরাম হোসাইন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, মহেশখালী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন