মহেশখালী প্রতিনিধি:
‘তথ্য পেলে মুক্তি মেলে, সোনার বাংলার স্বপ্ন ফলে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মহেশখালি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস পালিত হয় । ডিএফআইডি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত কোস্ট ট্রাস্টের সামাজিক সুরক্ষা সেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা উন্নয়ন (এসজিএসসি) প্রকল্পের সহায়তায় দিবসটি উদ্যাপিত হয়।
বুধবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণে একটি র্যালি বের হয়ে তা সদর এলাকার অফিস ও বাজার প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে তথ্য জানার অধিকার সম্বলিত নানা শ্লোগানের প্লেকার্ড ছাত্র-ছাত্রীরা বহন করে। র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা একটি সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম ।
উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, কোস্ট ট্রাস্টের এসজিএসপি প্রকল্পের সমন্বয়কারী মকবুল আহমেদ, শাপলাপুর সিটিজেন ফোরামের সভাপতি বশির আহমেদ আজাদ, উপজেলা সিটিজেন ফোরাম সভাপতি নুরুল আমিন, গোরকঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার দাশ, পৌরসভার সিটিজেন ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহেশখালী প্রেসক্লাবের জিএস আবুল বশর পারভেজ, মহেশখালী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী শাহিদা আকতার, গোরকঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মাহবুব আলম প্রমুখ।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, কোস্ট ট্রাস্টের সরকারী সামাজিক সুরক্ষা সেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার এসএম ইকবাল হোসেন, মনিটরিং অফিসার ফ্রান্সিস ত্রিপুরা। সভায় এবং র্যালিতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিভিন্ন পেশার মানুষ ও সিটেজেন ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোস্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে সামাজিক সুরক্ষা সেবা নীতিমালা বিষয়ক তথ্য মেলার একটি স্টল করা হয়। উক্ত স্টলটি উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম। এ স্টলে তথ্য সামাজিক সুরক্ষা সেবার বিভিন্ন নীতিমালা ও তথ্য অধিকারের বিভিন্ন বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, তথ্য অধিকারের আবেদন ফরম এর নমুনা কপি প্রদর্শিত হয় এবং তথ্য অধিকারের সচেতনতামূলক গান পরিবেশন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, এক সময় সরকারী ও বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠানে তথ্য গোপন করে রাখা হতো। জনসাধারণ কোন তথ্য জানতে চাইলে তা কোন ভাবেই সম্ভব ছিলনা। বলা হতো তথ্য হলো গোপন বিষয় যা জনসাধারণ জানলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে। কিন্তু একটি দেশের প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি সবার আগে নাগরিকের জানার অধিকার। তিনি বলেন, সরকারীর ও বেসরকারী পর্যায়ের যে কোন উন্নয়ন কার্যক্রম যদি জনসাধারণের সামনে উন্মুক্ত থাকে তাহলে তার সঠিক বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা অবাধ তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সম্ভব করা যায়। সেই বিবেচনায় ২০০৯ সালে সরকার তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন করে।
তিনি আরও বলেন, আইনে বলা হয়েছে রাষেট্রর সকল নাগরিক সকল তথ্য জানার অধিকার রাখে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রের অখন্ডতা বিনষ্ট হতে পারে এমন তথ্য এবং প্রতিরক্ষার বিষয়গুলি ব্যতীত আর সকল তথ্য জানা নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। যা বর্তমানে নাগরিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়।