parbattanews

মহেশখালীর কোহেলিয়া নদী রক্ষার দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ

১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কোহেলিয়া নদী পূনরুদ্ধারের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) , ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ ও কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটির আয়োজনে ১৪ মার্চ (সোমবার) ২০২২ইং আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বিকাল ৪টার সময় কোহেলিয়া নদীর পাড়ে মাতারবাড়ী উত্তর রাজঘাট বাজারে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

বাপা মহেশখালী আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোছাদ্দেক ফারুকীর সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সঞ্চালনা করেন বাপা মহেশখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আবু বক্কর ছিদ্দিক ।

উক্ত মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মাতারবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বক্তব্য রাখেন, বাপা মহেশখালী শাখার সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ডাঃ এয়াকুব আলী , বাপা’র সহ-সভাপতি মাষ্টার মো. নুরুন্নবী , বাপা’র সহ-সভাপতি সাংবাদিক আমিনুল হক , মাতারবাড়ী ৩নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য মাষ্টার আলা উদ্দিন , মাতারবাড়ী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ অচিন্ত কুমার দে , বাপা’র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোছাইন , মাষ্টার গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন , বাপা মহেশখালী আঞ্চলিক শাখার প্রচার সম্পাদক আলা উদ্দিন আলো , সদস্য পেকুয়ার সাংবাদিক দেলাওয়ার হোছাইন , কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সাংবাদিক কাজী মো. হারুন মির্জা, বাপা সদস্য মোস্তফা কামাল, ওমর ফারুক বদরী, জাহাঙ্গীর আলম, শাহেদুল ইসলাম শাহেদ, মুহিব উল্লাহ, মৎস্য চাষী আব্দু রহমান, মীর কাসেম, শাহজাহান, লবন ব্যবসায়ী জসিম, মাহাবুব, ফারুক, হাবিব উল্লাহ প্রমুখ।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন কোহেলিয়া নদীর সাথে মহেশখালী মানুষের জীবন জীবিকা জড়িত রয়েছে্সু। তরাং কোহেলিয়া নদী ধ্বংস করা হলে মহেশখালী মানুষের উপর চরম অন্যায় অবিচার করা হবে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের ওজুহাত দেখিয়ে নদী দখল করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে । এখন এই উন্নয়নেই মহেশখালীবাসির গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে । মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বর্জ্য ফেলে সম্পুর্ণ ভরাট হয়েছে কোহেলিয়া নদী। এতে হাজার হাজার জেলে পরিবার তাদের পেশা ও কর্ম হারিয়ে বেকারত্ব জীবনযাপন করছে ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নদীর পানি দুষিত হওয়ায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে নদীর দু’পাশের চিংড়ি প্রজেক্টে মাছ মারা যাচ্ছে । একারনে চিংড়ি ব্যবসায়ী ও চিংড়ি প্রজেক্ট ইজারাদারদের প্রতি বছর কোলসান গুনতে হচ্ছে । একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লবন চাষী ও ব্যবসায়ীরাও । কোহেলিয়া নদীর গভীরতা না থাকায় পানির লবণাক্ততাও কমে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বক্তারা।

নদীর পানি লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় লবন উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বক্তারা । স্থানীয় প্রভাবশালীরা নদীর চরে খন্ড খন্ড বাঁধ দিয়ে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করে নদী চর দখলে নিচ্ছে। কিন্তু কিছু উপকূলীয় সরকারী বিট কর্মকর্তা নদী দখলকারীর কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে এসব নদী দখলকারীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন । প্রকল্পের কারনে কোহেলিয়া নদী ধ্বংস করা হচ্ছে কিন্তু এনদীর সাথে জড়িত জেলে , লবন চাষী ও ছোট বড় নৌযানের মাঝিমাল্লা সহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উক্ত প্রকল্পে তাদের কোন চাকরি কিংবা কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন বলে জানান।

মহামান্য হাই কোর্ট নদীকে জীবন্ত সত্বা ঘোষণা করলেও কেন কোহেলিয়া নদীকে হত্যা করা হচ্ছে এমনটি প্রশ্ন করেছেন মানববন্ধনে বক্তারা । অবিলম্বে মহেশখালীর প্রাণ কোহেলিয়া নদী পুনরুদ্ধারের দাবী জানিয়ে নদী দখলকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান ।

Exit mobile version