মাইকেল চাকমার গ্রেফতার ও ইউপিডিএফ নিষিদ্ধের দাবিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ


পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, হত্যা, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু ভাস্কর্য চত্বরে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সংগঠনটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করা এবং এর সংগঠক মাইকেল চাকমাকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আল আমিন এবং সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মিজান উদ্দিন। প্রধান অতিথি ছিলেন পিসিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ।
এই সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমা পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির মূল নেপথ্য পরিকল্পনাকারী। তার বিরুদ্ধে খুন, গুম, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপরাধের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও প্রশাসনের নাকের ডগায় অবস্থান করছেন।
বক্তারা বলেন, মাইকেল চাকমাকে ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলেও তিনি প্রকাশ্যে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা প্রশাসনের ব্যর্থতার পরিচায়ক।
সমাবেশে বক্তারা রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী মারমা নারীকে কয়েক মাস ধরে মারমা যুবকদের দ্বারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, প্রথাগত বিচারের নামে অভিযুক্তদের মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ও একটি শূকর জরিমানা করা হয়েছে, যা চরম অমানবিক ও বিচারবহির্ভূত। বক্তারা প্রশাসনের ভূমিকা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
এছাড়াও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলীতে স্থানীয় বাঙালি পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনায় জড়িত উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মোঃ রাসেল মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, গুম, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ প্রশাসনের চোখের সামনেই ঘটছে, অথচ প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণ জানতে চান এবং বলেন, “যত বড় ছত্রছায়ায় থাকুক না কেন, মাইকেল চাকমার মতো অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।‘
বক্তারা আরও বলেন, ধর্ষক যে-ই হোক, তার বিচার হতে হবে দেশের প্রচলিত আইনে। প্রথার নামে অন্যায় বা অবিচার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা পাহাড়ে সকল সন্ত্রাসী সংগঠন নিষিদ্ধ করা, প্রশাসনের কার্যক্রম জোরদার করা এবং যৌথবাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, সম্প্রীতি ঐক্য জোটের সমন্বয়ক থোয়াই চিং মং চাক, ঢাকা মহানগর দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান জাকির, অর্থ সম্পাদক মুহিব্বুল্লাহ পারভেজসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

















