parbattanews

মাটিরাঙা পৌরসভায় নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

৪র্থ ধাপে আগামীকাল রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা পৌরসভার নির্বাচন। শঙ্কার মধ্যেও কোন ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। সহিংসতা রোধে প্রশাসনও রয়েছে কঠোর অবস্থানে। ইতিমধ্যে পৌরসভা নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

তবে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপারসহ ভোটের যাবতীয় উপকরণ কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পৌরসভায় সব ক’টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহিৃত করে ভোটারবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে র‌্যাব ও বিজিবি’র স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ চার স্তরের নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। সে সাথে প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।

মাটিরাঙা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শামসুল হক, বিএনপির শাহজালাল কাজল দলের মনোনয়ন না পেয়ে মাটিরাঙা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং মাটিরাঙা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম(মোবাইল ফোন) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জয়ের ব্যাপারে তিন প্রার্থীই আশাবাদী। এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪০ জন ও সংরক্ষিত নারী তিন আসনের মধ্যে একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও অপর দুই আসনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মাটিরাঙা পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৯৭৫ জন। পুরুষ ও নারী ভোটার প্রায় সমান।

মাটিরাঙা পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকে মেয়র প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি পাল্টা-পাল্টি অভিযোগে লিপ্ত হলেও কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবে ভোটারদের তাড়া করে ফিরছে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে প্রাণহানিসহ রক্তাক্ত সহিংসতার স্মৃতি।

বিগত ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচনী সহিসংতায় মাটিরাঙ্গায় উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম নিহত হয়। এছাড়া নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষের এজেন্ট ও সমর্থকদের উপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সে সব স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেননি ভোটাররা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে বেশ কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেন, বিগত সবগুলো নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে তারা হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন। তাদের একটাই দাবি নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ। তাহলে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে।

মাটিরাঙা পৌরসভা নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদ বলেন, বিগত পৌরসভা নির্বাচনে রক্তাক্ত সহিংসতার অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপারসহ ভোটের যাবতীয় উপকরণ কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন জানিয়ে তিনি বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনে জিরো টলারেন্স নীতিতে খাগড়াছড়ি সদর পৌরসভার মত মাটিরাঙা পৌরসভার নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে।

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অনুষ্ঠিত মাটিরাঙা পৌরসভা নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা বর্ষিত হবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

Exit mobile version