মাটিরাঙ্গায় জমে উ‌ঠে‌ছে ঈদ বাজার

fec-image

চল‌ছে রমজা‌নের শেষ দশক। দরজায় কড়া লাড়‌ছে ঈদ। আর মাত্র কয়েক দিন বাকি ঈদের। জ‌মে উ‌ঠে‌ছে ঈদের কেনাকাটা। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন বিপণি বিতান ও ফুটপাতজুড়ে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সকাল ১০টার পর থে‌কে বিকাল ৫টা ও ইফতা‌রের পর থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত বাহা‌ড়ি র‌ঙ্গের পোশাক প‌ড়ে আবলা, বৃদ্ধ, ব‌নিতা, নানা বয়‌সী শ্রেণী পেশায় স্থানীয় ক্রেতা‌দের পদভা‌রে মুখ‌রিত হ‌য়ে উঠ‌ছে দোকানগুলোতে। বি‌শেষ ক‌রে নারী ক্রেতার উপ‌স্থি‌তি চো‌খে পড়ার মত। ঈদ যত ঘ‌নি‌য়ে আস‌ছে বাড়ছে ক্রেতার উপস্থিতি।

সরেজমিনে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, পোশা‌কের পাশাপাশি কসমেটিকস, এবং গৃহসজ্জার সামগ্রীতে নারী ক্রেতাদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার অন্য বছরের তুলনায় বিক্রি ভালো হচ্ছে , পোশা‌কের দাম ক্রেতার নাগা‌লে থাকায় ক্রেতা‌দের কোন অ‌ভি‌যোগ নাই। বি‌শেষ ক‌রে নারী ক্রেতাদের অংশগ্রহণে বাজার আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

এদিকে, কম দামে পোশাক, জুতা কিংবা ঈদের সাজগোজের সামগ্রী কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই জানালেন, সন্তান ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে হলেও এবার হিসেব করে খরচ করতে হচ্ছে।

মাটিরাঙ্গার কাপড়ের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, দোকানদাররা কেনাবেচায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন। মাটিরাঙ্গায় ছোট-বড় প্রায় ৭০ টির বেশি কাপড়ের দোকান রয়েছে।

ব্যাবসায়ীরা জানান, ১০ রমজানের পর এসব দোকানগুলোতে ঈদের বেচাবিক্রি শুরু হয়। পোশাক না কিনে দেখতেও আসেন অনেকে। দামাদামি করে অনেকে ফিরে যান।

তবে এক দামে বেশিরভাগ দোকানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চলছে। ‌দোকান ভেদে প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ হাজার থে‌কে লক্ষ টাকা বিক্রি করা হয়।

এবার বাচ্চাদের পোশাক, পাঞ্জাবি এবং থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে, তবে তানাবানা কাতান শাড়ি, পাকিস্তানি থ্রি-পিসের চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলের পাঞ্জাবির চাহিদা ও প্রচুর ঈদে নিজেদের পরিবার বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও আত্মীয়দের গিফট হিসেবে পাঞ্জাবি প্রদান করা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা তাদের কর্মীদের জন্য পাঞ্জাবি কিনতে ভিড় করছেন ফ্যামিলি শপিং, চয়েস শপিং, সায়মা ফ্যাশনের দোকানে।

শিউ‌লি আক্তার নামে একজন ক্রেতা বলেন, নি‌জের ও বাচ্চাদের জন্য জামা নিতে চেয়েছিলাম,কিন্তু শপিং মলে গিয়ে দেখি এক সেটের দামই অনেক বেশি। তাই ফুটপাথই থেকে কিনে নিলাম।

ক্রেতা সুমন মিয়া জানান, মা-বাবা এবং স্ত্রীকে নিয়ে বাজারে এসেছি মহিলারা তাদের নিজেদের পোশাক নিজেরাই পছন্দ করে কিনতে পছন্দ করে তাই তাদেরসহ নিয়ে আসা। আমরা আমাদের পোশাক পছন্দ করবো তারা তাতের টা পছন্দ করবে।

রিয়াদ স্টোরের মা‌লিক মো. আজাদ নবী বলেন, বেশিরভাগই নারীরা পোশাক কিনতে আসেন,দোকানে সবসময় ভাল বেচাকিনা হয়। তবে দোকানে থ্রি-পিস এবং শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। আমি কোন কাস্টমার কে ফেরাই না অল্প ব্যাবসা হলে বিক্রি করে ফেলি। আমার আগে বড় দোকান ছিল সেটা ভেঙে এখন দুইটা করেছি বিক্রিও বেশ ভাল।

চয়েস শপিং সেন্টারের সত্বাধিকারী ওবায়দুল হক মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এখন মানুষের আয় কম তাই বিক্রি কম হচ্ছে ,অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আমার দোকানে বিক্রি কম। আগে ২০ রমজানে দোকানে ভিড় থাকতো এখন তেমনটা নাই। চিন্তায় আছি ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবো কি না।

কাজী বস্ত্র বিতানের মাহবুবুল হক বলেন, রমজানের প্রথম দিকে ব্যবসা ভালো না হলেও ১০ রমজানের পর থেকে ঈদের কেনাকাটা জমতে শুরু করেছে। ঈ‌দের আগ মুহু‌র্তে কি‌ক্রি আরও জমজমাট হবে ব‌লে জানান তি‌নি।

কার্বন বেবি শপের আবছার জানান, আমার দোকানে নারী ক্রেতাই বেশি। তবে, আমার দোকানে সবসময় বিক্রি ভাল হয়। বাচ্চাদের কাপড় কয়েক আইটেম শেষ হয়ে গেছে। তাই আমি আজ রাতেই ঢাকা যাবো কাপড় আনতে।

মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌ‌ফিকুল ইসলাম তৌফিক জানান, জনগণ যেন নির্ভয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে পারে, সে জন্য মাটিরাঙ্গা পুলিশ বাজার এলাকায় টহল জোরদার করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, মাটিরাঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন