parbattanews

মাটিরাঙ্গার সীমান্তবর্তী গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে অনলাইনে জুয়া ‘শীলং তীর’

পার্বত্য খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী রামগড় ও গুইমারার পরে ভারত ভিত্তিক অনলাইনে জুয়া ‘শীলং তীর’ ছড়িয়ে পড়েছে মাটিরাঙ্গার সীমান্তঘেঁষা বড়নালের গ্রামে গ্রামে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শ্রমিক ও প্রান্তিক কৃষকরাও এই জুয়ায় আসক্ত হয়ে লাখ লাখ টাকা হারাচ্ছে। এমনকি গ্রামের নারীরাও এ খেলায় সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। শীলং তীর বর্তমানে সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তঘেঁষা বড়নালের ডাকবাংলা এবং মৌলভী পাড়ায় পৃথক তিনজন স্থানে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে বিশেষ পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় ভারত ভিত্তিক অনলাইনে জুয়া ‘শীলং তীর’। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের চত্রছায়ায় চলছে বিশেষ পদ্ধতির এ জুয়া খেলা। বিভিন্ন ফোরামে ‘শীলং তীর’ জুয়া খেলা নিয়ে বারবার কথা হলেও বরাবরই তারা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের ‘শীলং’ নামক স্থান থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে এ জুয়া খেলাটি পরিচালিত হয় বিধায় এটি ‘শীলং তীর’ নামে পরিচিত। ১ থেকে ৯৯ পর্যন্ত সংখ্যাভিত্তিক এ জুয়া খেলা একটি কৌশলগত অনলাইন ভিত্তিক জুয়া। ৮০গুন লাভের আশায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শ্রমিক, দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকরাও এ মরন ফাঁদে পা দিচ্ছে। জানা গেছে, ভারতের সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববার ব্যতিত প্রতিদিন দুই ধাপে ড্র হয়ে থাকে বিশেষ পদ্ধতির ‘শীলং তীর’ জুয়া খেলাটি। প্রথম ধাপে বিকাল সাড়ে ৩টা-৪টার সময় আর দ্বিতীয় ধাপে রাত সাড়ে ১০টা-১১টার সময়। প্রতিদিন দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকার জুয়া খেলা হয় বিশেষ পদ্ধতিতে। ভারত ভিত্তিক বিশেষ পদ্ধতির এ জুয়ার আসর থেকে হাতেগোণা কয়েকজন হাসিমুখে ফিরলেও সিংহভাগই ফিরেন নিঃস্ব হাতে।

জানা গেছে, ৭/৮ মাস পুর্বে ২৩, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি‘র যামিনপাড়া জোন অধিনায়কের নেতৃত্বে শীলং তীর’ জুয়া খেলার সাথে জরিত ৬-৭ জনকে আটক করা হলেও পরে ভবিষ্যতে এ খেলা চলবেনা মর্মে মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর বেশ কিছু দিন খেলাটি বন্ধ থাকলেও কিছু দিন না যেতেই পুরোদমে শুরু হয় ‘শীলং তীর’ খেলা। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শীলং তীরে নিঃস্ব হয়ে অনেকেই মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার ‘শীলং তীর’ জুয়া নিয়ে কথা হলেও কোন ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে তারা বরাবরই থেকে গেছে ধরাছোয়ার বাইরে। এদিকে এসব জুয়াড়িদের কারণে এলাকায় অস্থিরতা বাড়ছে। উঠতি বয়সী তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে। সামাজিক সঙ্কট তৈরি হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি জানেন না উল্লেখ করে খোঁজ নিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামছুদ্দিন ভুইয়া।

Exit mobile version