মাটিরাঙ্গায় শীতার্তদের মাঝে উষ্ণতা ছড়ালেন এসিল্যান্ড
পৌষের কনকনে শীতে কাবু পাহাড়ের হতদরিদ্র মানুষ। তীব্র শীতে সীমাহীন কষ্টে পড়েছে পাহাড়ের বয়স্ক মানুষগুলো। এ পরিস্থিতিতে শীতার্ত মানুষককে কম্বল জড়িয়ে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে রাতের শীত উপেক্ষা করে মধ্যরাতে পাড়ায় পাড়ায় ছুটছেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ফারজানা আক্তার ববি। কনকনে শীতে মানুষ যখন ঘর থেকে বের হতে পারছেনা তখন কম্বল নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ছটছেন প্রশাসনের তরুন এ কর্মকর্তা।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন গ্রামে হতদরিদ্র মানুষকে উষ্ণতা দিতে কম্বল নিয়ে শীতার্ত মানুষের ঘরে ঘরে হাজির হন মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ফারজানা আক্তার ববি।
এসময় তিনি মাটিরাঙ্গার পুর্ব খেদাছড়া, তাইফা, খানটিলা ও কাজীপাড়া এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে শীতে জবুথবু শীতার্ত মানুষের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন। গভীর রাতে ভাঙা ঘরে অসুস্থ আশি বছরের বৃদ্ধ মো. দেলোয়ার হোসেনের গায়ে পরম মমতায় কম্বল জড়িয়ে দেন প্রশাসনের এ কর্মকর্তা। এসিল্যান্ডের দেয়া কম্বলে উষ্ণতা পেয়েছে কাজীপাড়ার মানসিক ভারসাম্যহীন সত্তরোর্ধ আমেনা বেগম।
কম্বল পেয়ে অসহায় ও হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষগুলোর মুখে ফুটেছে প্রাপ্তির হাসি। কম্বল হাতে পেয়ে তৃপ্তির হাসি হেসে আয়তন নেছা এসিল্যান্ডের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন। তিনি বলেন, কনকনে শীতে জীবন-যাপন কষ্টের হয়ে পড়েছে। কম্বল পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন আমেনা বেগম। মোহছেনা বেগম কম্বল পেয়ে দু’হাত তুলে দোয়া করতেও ভুল করেননি।
কাজীপাড়ায় একটি ভাঙা ঘরে শুয়ে আছেন অসুস্থ মো. দেলোয়ার হোসেন। ঘরের চারদিক দিয়েই হিমহিম বাতাস ঢুকছে হু হু করে। প্রচণ্ড শীতে যুবুথুবু দেলোয়ার হোসেনের গায়ে পরম মমতায় কম্বল জড়িয়ে দিতেই কেঁদে উঠলেন তিনি। বললেন, এসময়ে গায়ে কেউ একটা গরম কম্বল জড়িয়ে দেবে ভাবতে পারিনি। আল্লাহ তোমার ভালো করুক।
মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া কম্বল প্রকৃত দুস্থ শীতার্ত মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতেই রাতের অন্ধকারে মানুষের ঘরে ঘরে ছুটছেন তিনি। ভবিষ্যতেও শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।