মাটিরাঙ্গা আ.লীগের কাউন্সিলে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন মো. শামছুল হক
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলকে সামনে রেখে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সড়ে দাঁড়ালেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক। কাউন্সিলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি তিনি নিজেই এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে পাল্টে গেছে সভাপতি পদের সব হিসাব-নিকাশ।
কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই সভাপতি পদে তিন জন প্রতিদ্বন্ধি থাকলেও কাউন্সিলের চারদিন আগে (৭ অক্টোবর) মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে পরিচিত মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ুন মোরশেদ খান-কে সমর্থন করে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সরে দাড়ান। শেষ মুহুর্তে এসে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের টানা দুইবারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ুন মোরশেদ খানকে সমর্থন করে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সরে দাড়ানোর ফলে ভোটের মাঠে নয়া মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে।
মো. শামছুল হক‘র প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে এ পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় রইলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ুন মোরশেদ খান এবং মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। দুজনেই কাঙ্খিত জয়ের জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। একজন ডানে গেলে অন্যজন যাচ্ছেন বামে। সভাপতি পদে এ দুই প্রার্থীকে ঘিরে নেতাকর্মী আর কাউন্সিলরদের তৎপরতা চোখে পড়ছে। তৃনমুল কাউন্সিলরদের কদর যেন আকাশছোঁয়া।
নানা কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ এ কাউন্সিলে সভাপতি পদে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ুন মোরশেদ খানকে এগিয়ে রাখছেন তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। তাদের মতে এম হুমায়ুন মোরশেদ খান দু:সময়ে আওয়ামীগের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। তাদের মতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে নিজের পরিবার আর ব্যবসা-বানিজ্যকে পেছনে ফেলে কর্মীদের পাশে দাড়িয়েছিলেন এম হুমায়ুন মোরশেদ খান।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অভিভাবক কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি মহোদয়ের নির্দেশে আমি প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছি। মাটিরাঙ্গায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার পেছনে এম. হুমায়ুন মোরশেদ খান এর অবদানের কথা স্মরণ করে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করতে আওয়ামী লীগের তৃনমুল কাউন্সিলরদের প্রতি আহবান জানান।
আগামী দিনে কে হবেন দলের কান্ডারী.. ? সভাপতি-সম্পাদক পদে কে হাসবে বিজয়ের হাসি..? তা নিয়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস পাড়া সর্বত্র আলোচনা ঝড় উঠেছে। সকলের দৃষ্টি আটকে আছে আগামী ১২ অক্টোবরের দিকে। পাশাপাশি পছন্দের অভিভাবককে বরন করতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দলটির তৃনমুল নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১২ সালের ৬ অক্টোবর মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে মো. শামছুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সভাপতি নির্বাচিত হলেও কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সুবাস চাকমা সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। আরো চার বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও নানা অজুহাতে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি।