parbattanews

মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনে পাঁচ বছরে তিন শতাধিক বসতি নদীগর্ভে বিলীন

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বিপন্ন মানুষ। নদীর মাঝে বিলীন হয়ে গেছে বিগত পাঁচ বছরের নদীপারের শতাধিক বসতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বন্যায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে এখনো হুমকির মুখে উপজেলার মাতামুহুরী নদীর দুই তীরে বসবাসকারী হাজারো পরিবারসহ ধর্মীয় ও সামাজিক শতাধিক প্রতিষ্ঠান। শুধুমাত্র গত পাঁচ বছরে পৌরসভাসহ অন্তত তিন শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে এ নদীগর্ভে।

মাতামুহুরী নদীর তীব্র ভাঙন ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ না থাকায় শত বছরের পুরোনো মানিকপুর বৌদ্ধ মন্দির, বেতুয়া বাজারের পুরানো জামে মসজিদ, দিগরপানখালীর কেন্দ্রীয় ক্ষেত্রপাল মন্দিরটিও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় ভাঙন ঠেকিয়ে বসতবাড়ি, ফসলী জমি, ধর্মীয় স্থাপনা রক্ষার জোরালো দাবি উঠেছে উপজেলাবাসীর মাঝে।

স্থানীয়রা পার্বত্যনিউজকে বলেন, টানা এক সপ্তাহের ভারি বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের বানের পানিতে তলিয়ে যায় পুরো উপজেলা। হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে যায় নিম্নাঞ্চল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। অভ্যান্তরীণ সড়ক, উপ-সড়ক দিয়ে যাতাোত সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বানবাসি মানুষ তারা কেউ কেউ কারো আত্বীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার পানির সংকট।

সরেজমিন ঘুরে দেখাগেছে, নদীর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে কোচপাড়া, এক নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল বারী সিকদার পাড়া, কাজীর পাড়া, বিএমচরের বেতুয়া বাজার পয়েন্ট, কন্যারকুম, কোনাখালী কাইদ্যার দিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা। নদীর দুই তীরে কোন ধরনের স্থায়ী বাঁধ না থাকায় বিগত পাঁচ বছরে শুধুমাত্র এসব পাড়ার অন্তত তিন শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

শনিবার সকালে ও দুপুরে বন্যা কবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙ্গনকৃত বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে ছুটে যান চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী, কক্সবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাহুল বিশ্বাস। তারা প্রথমে বেতুয়া বাজার পয়েন্টে ব্রীজের ভাঙ্গন এলাকা, বিএমচরের কইন্ন্যারকুম এলাকা, কোনাখালী কাইদ্যার দিয়া ও বাগগুজারা পয়েন্টে এলাকা পরিদর্শন করে। পরে চকরিয়া পৌরসভার দিগরপানখালী এলাকায় ও কোচপাড়া পয়েন্ট পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) তারেক বিন সগীর, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, বিএচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাহুল বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিশেষত বেতুয়া বাজার এলাকার ভাঙ্গনকৃত এলাকাসমূহ ও কইন্ন্যারকুম এলাকায় দ্রুতসময়ে কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকায় ভাঙ্গন সমূহ বরাদ্দ আসলেই ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

Exit mobile version