parbattanews

মাদক-জলদস্যু নির্মূলের দ্বারপ্রান্তে কুতুবদিয়া

মাদক নির্মূলের দ্বারপ্রান্তে এখন দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। গত দু‘বছর আগেও উপজেলার আনাচে-কানাচে বিশেষ করে উপজেলা সদর বড়ঘোপ উত্তর মগডেইল, চাঁনমিয়া পাড়া ঝাউতলা, বিদ্যুৎ মার্কেট, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়েনে ধুরুং কাঁচা, নাথপাড়া প্রভৃতি গ্রামে বাংলা মদ তৈরির কারখানা ছিল। এসব মাদক ব্যবসায়িরা একই সাথে গাঁজাও বিক্রি করতেন সমানতালে।আর এই বাংলা মদ, গাঁজা বেঁচা-কেনার স্থান ছিল ধুরুংবাজার, চৌমুহনী বাজার, শান্তিবাজার, বড়ঘোপ বাজার সহ গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টগুলো। প্রশাসন মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে কারখানা, বেঁচা-কেনা বন্ধে পদক্ষেপ নিলেও তা ছিল সাময়িক।

এমন পরিস্থিতির মাঝে ধীরে ধীরে ইয়াবা ট্যাবলেট প্রসার লাভ করায় আতংকিত হয়ে পড়েন সচেতন মহল। আধুনিক মাদকের উত্থানের শুরুতেই কুতুবদিয়া থানায় যোগদান করেন নতুন অফিসার ইন্চার্জ(ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস। তার টার্গেটের মূল মাদক নির্মূল আর জলদস্যু নিয়ন্ত্রন মিশন শুরু করেন। একের পর এক নানা কৌশলে আটক করতে থাকেন ইয়াবা ব্যবসায়ি, জলদস্যু। মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে সফলও হন তিনি। মাদক আর জলদস্যূ নিয়ন্ত্রণে দু‘বছরেই কাঙ্খিত ফল ভোগ করে প্রায় দেড়লক্ষ দ্বীপবাসি।

বড়ঘোপ চাঁনমিয়া পাড়া ঝাউ বাগানের পাশে এক সময় মদ, গাঁজা বিক্রির আখড়া ছিল। সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবিসি কিন্ডার গার্টেন নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান সুজন জানান, যেখানে এক সময় মাদকের বিস্তার ছিল। তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠায় অত্র এলাকায় ৯৯ ভাগ মাদক নির্মূল হয়েছে। উপজেলার বেসরকারি প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এটি শ্রেষ্ঠ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাদক নির্মূলে বিরাট ভুমিকা রয়েছে তাদের।

বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান ও কুতুবদিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি আ.ন.ম শহীদ উদ্দীন ছোটন বলেন, মাদক আর জলদস্যূ নির্মূলে বর্তমান ওসি আন্তরিক ও নিরলস ভাবে করছেন। যে কারণে তিনি খুব শীঘ্রই বড়ঘোপ ইউনিয়ন মাদক মুক্ত ঘোষণা করবেন বলে জানান।

থানা সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৮৭টি মাদক মামলায় ২৯৮ জনকে মাদক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। ১৯ হাজার ৯৯৭ পিচ ইয়াবা, ১২৮ লিটার মদ, প্রায় ৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

থানার অফিসার ইন্চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস বলেন, মাদক আর জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে তিনি সফল বলে মনে করেন। এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। এর পাশাপাশি উপজলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ এখন নেই বললেই চলে। তবে যাতে ভবিষ্যতে মাদক-জলদস্যু উত্থান ঘটতে না পারে সেজন্য পুলিশী তৎপরতাও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version