মানিকছড়িতে অন্যকে পিতা সাজিয়ে মৃত ব্যক্তির সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা

fec-image

মানিকছড়ি উপজেলার লেমুয়া মুসলিমপাড়ার অধিবাসী পেয়ার আহম্মদ ৫ ছেলে ও ২ স্ত্রী রেখে ২০০১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বড় ছেলে মোহাম্মদ মানিক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ১৯৭১৪৬১৬৭৬৩৫২০৪২০, জন্মসনদ, নিকাহনামা এবং হলফনামামূলে ক্রয়কৃত ভূমির দলীলপত্রে পিতার নাম পেয়ার আহম্মদ থাকা স্বত্বেও ওলি-ওয়ারিশহীন এক মৃত্যু ব্যক্তির সম্পদ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ৫০ বছর বয়সে এসে নিজ পিতার নামের স্থলে ওই মৃত প্রতিবেশি ব্যক্তিকে পিতা হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তির প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে শেষ করার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে মানিকছড়িতে।

অভিযোগ ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার লেমুয়া মুসলিমপাড়ার পেয়ার আহম্মদ ৫ ছেলে ও ২ স্ত্রী রেখে ২০০১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বড় ছেলে মোহাম্মদ মানিক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ১৯৭১৪৬১৬৭৬৩৫২০৪২০, জন্মসনদ, নিকাহনামা এবং হলফনামামূলে ক্রয়কৃত ভূমির দলীল পত্রে পিতার নাম পেয়ার আহম্মদ লিপিবদ্ধ রয়েছে।

অপরদিকে একই এলাকার অধিবাসী আবদুল বর, পিতা চান্দু মিয়া গত ১৯৯৮ সালের ২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার কোন ওলি-ওয়ারিশ ছিল না। শুধু তার নামে ২০৮নং মানিকছড়ি মৌজায় ৫.০০ (পাঁচ) একর ৩য় শ্রেণির টিলা ভূমি রয়েছে। যার হোল্ডিং নং ৪৩৯।উক্ত ওলি-ওয়ারিশহীন বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া টিলাভূমি আত্মসাতে মেতে উঠে এই মোহাম্মদ মানিক ও একটি ভূমি সিন্ডিকেট চক্র। ফলে মোহাম্মদ মানিক তার জন্মসনদ, নিকাহনামা এবং হলফনামা মূলে ক্রয়কৃত ভূমির দলিলপত্রে থাকা পিতার নাম পেয়ার আহম্মদ’র স্থলে ওই প্রতিবেশি মৃত আবদুল বরকে নিজ পিতা দেখিয়ে জন্মসনদ, ইউপি চেয়ারম্যান নাগরিক সনদ ও জেলা প্রশাসক নাগরিক সনদ অর্জন করেন। এখন চলছে এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) পরিবর্তনের পালা। আর তা করার জন্য নাম পরির্বতনের ফাইলটি এখন চট্টগ্রামস্থ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস রয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর কাজটি অনেকটা অধরা থেকেই ষোল আনার আট আনা শেষ করে ফেলেছেন মোহাম্মদ মানিক। বিষয়টি জানাজানির পর আরেক প্রতিবেশি যুবক মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার আঞ্চলিক অফিসে গত ১১ এপ্রিল একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন।

নির্বাচন কর্মকর্তার আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের ভোটার সংশোধনী আইনের ক্যাটাগরিতে একজন ব্যক্তির পুরো নাম সংশোধন জটিল বিষয়। ফলে সংশোধনী আইনে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে চার ক্যাটাগরিতে এটি করা হয়। ক্যাটাগরি ক,খ,গ ও ঘ। প্রথম দুইটি (ক ও খ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা করার ক্ষমতা রাখেন। আর গ ও ঘ ক্যাটাগরির গ ধারাটি আঞ্চলিক অফিস করেন। অপরটি ঢাকা অফিস করবে। যেহেতু অভিযুক্ত মোহাম্মদ মানিক এর পিতার নাম পরিবর্তনের বিষয়টি জটিল। কেননা একজন ব্যক্তি ও তার ভাইসহ তাদের এ যাবতকালের সকল রেকর্ডপত্রে থাকা পিতার নাম হঠাৎ করে পরিবর্তনের আবেদন রহস্যজনক। এটি অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষেয়ে মতামত জানতে অভিযুক্ত মোহাম্মদ মানিক এর সাথে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন