মানিকছড়িতে তামাক ছেড়ে সবজি চাষে ঝুঁকছে প্রান্তিক কৃষক

fec-image

এশিয়া মহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ হালদা নদীর উজান মানিকছড়িতে বিগত সময়ে অবাধে তামাক চাষ হলেও এই প্রথম সর্বনিন্ম পর্যায়ে নেমে এসেছে তামাক চাষ! আর এই সফলতা এসেছে হালদা গবেষক, প্রশাসন ও আইডিএফ হালদা প্রকল্পের যৌথ প্রচেষ্টায়।

জানা গেছে, এশিয়া মহাদেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। এটি সম্প্রতি অর্জন করেছে দেশের ঐতিহ্যের অহংকার। ফলে একে ঘোষণা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ। দীর্ঘদিন ধরে এ নদীর উজানস্থল খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে হালদার চরে অবাধে চাষ করা হতো তামাক! ফলে তামাক ক্ষেত ও এর চুলা থেকে নির্গত বিষাক্ত পানিতে প্রতিনিয়ত দূষিত হতো হালদার পানি। হালদা নদীর উন্নয়নে গবেষকরা এ নিয়ে দীর্ঘ গবেষণায় হালদা নদী দূষণে অন্যতম কারণে তামাক চাষকে দায়ী করে এবং হালদার পারে তামাক চাষ নিষিদ্ধকরণে প্রস্তাবণা রাখেন উচ্চ পর্যায়ে।

ফলে বিষয়টি আমলে নিয়ে হালদা রক্ষায় কাজ শুরু করেন সরকার। ফলে হালদার চরে চিরতরে তামাক চাষ বন্ধসহ নদী দূষণরোধে নানাবিধ প্রকল্পের একটি হলো হালদাচরের কৃষকদের নিয়ে ভাবণা। এই অঞ্চলের তামাক চাষীদের বিকল্প জীবিকা উন্নয়নে সরকারের কৃষি বিভাগ, প্রাণী সম্পদ, মৎস্য সম্পদ এর পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইডিএফকেও সম্পৃক্ত করা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে পুরোদমে হালদাচরের কৃষকদের নিয়ে সরকারের যৌথ কর্মপরিকল্পনায় এখানকার শতাধিক কৃষক তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে পুষ্টিকর শাকসবজি, ফল-ফলাদি চাষাবাদে ঝুঁকছে। ফলে ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে হালদাচেরর চিত্র। চলতি মৌসুমে হালদার উজানে প্রায় ২ একর ভূমিতে তামাক চাষ হয়েছে। যেখানে বিগত ২/৩ বছর আগে প্রায় শতাধিক কৃষক যত্রতত্র তামাক চাষ করে জীবিকা নির্ভর করত।

এ প্রসঙ্গে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনঞ্জুরুল কিবরীয়া বলেন, হালদা নদী এশিয়া মহাদেশের প্রাণ। একমাত্র এই নদীতেই মিঠা পানির মা মাছ প্রতি বর্ষায় প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম দেয়। যা থেকে পোনা উৎপাদন করে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা হয়। এই হালদা আজ মানবাত্যাচারে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। ফলে হালদাকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের নানামূখি উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি আইডিএফ এর হালদা প্রকল্পে কৃষক ও জেলেদের জীবিকা উন্নয়নে কাজ চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন