parbattanews

মানিকছড়ি কোরবানীর পশুহাটে ক্রেতার জন্য বিশেষ ছাড়!

মানিকছড়ি কোরবানীর পশুর হাটে শেষ সময়ে পশু কেনায় ক্রেতারা সুবিদা পেলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারীর জীবন নাশ! কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রতি বছর গরু মোটাতাজা করেও লাভবান হয়ে আসলেও এবার প্রাণঘাতি করোনার ছোবলে খামারীদের সর্বনাশ।

মঙ্গল ও বুধবার (২৮ ও ২৯ জুলাই) উপজেলার রাজবাজার ও তিনটহরী বাজারে পশু বেচা-কেনায় পাইকারদের জন্য বিশেষ সুযোগ(ছাড়)! দিতে যাচ্ছে ইজারাদারা।

এতে শহরের পাইকার এবং ক্রেতারা হাসিলে কিছুটা ছাড় পাবে। অন্যদিকে ডেইরী খাতের অব্যাহত লোকসান পুষিয়ে উঠতে সরকারের আন্তরিক সহয়োগিতা কমানা করেছেন গো- খামারীরা।

উপজেলার বড় পশু হাট মানিকছড়ি সদর রাজবাজার ও তিনটহরী বাজারে কোরবানের পশু বেচা-কেনা হয় প্রতি শনিবার ও বুধবার। শেষ সময়ে এসে আগামীকাল মঙ্গলবার রাজবাজারে বিশেষ পশুহাট বসবে।

এছাড়া আগামী বুধবার তিনটহরী বাজারে যথারীতি পশুহাটটি জমজমাট হবে। উপজেলায় ছোট,মাঝারী ও বড় মিলে ৩৯টি ডেইরী ফার্ম ছাড়াও হাজারো কৃষক ঘরে ঘরে ২/৪টি করে দেশী বলদ,ষাঁড়, গাভী লালন-পালন করেছে।

করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির ওপর গুরুত্বরোপ করে বড় খামারীরা লাইফ ওয়েট পদ্ধদিতে অনলাইনে ৩০/৪০ ভাগ নামমাত্র মূল্যে ইতোমধ্যে বিক্রি করেছে! আর ছোট-মাঝারী ও কৃষক পরিবার কোরবানীর পশুহাটে গরু বেচা-কেনায় তেমন সুবিধা করতে না পারলেও ক্রেতারা এবার কোরবানের প্রিয় বস্তু গরু-ছাগল কেনায় সুবিধা পেয়েছে।

এই জনপদে মোটাতাজা করা ৫/৭ হাজার গরুর মধ্যে সব মিলেয়ে বড়জোড় এক/দেড় হাজার গরু ইতোমধ্যে লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছে খামারীরা!

মঙ্গলবার ও বুধবার শেষ কোরবানীর বাজার জমায়েত করতে দুই বাজারের ইজারাদারা ক্রেতার(পাইকার) বিশেষ ছাড়! দিতে সম্মত হয়েছে।

এমনিতে পশু কেনা-কাটার ক্রেতা শতকরা ৩% হাসিল দিতে হয়। কিন্তু আগামী দুই বাজারে পাইকারদের জন্য এতে কিছুটা ছাড়! দিয়ে বাজারটি জমায়েত করতে চায় ইজারাদাররা।

তিনটহরী বাজারের পশুহাট ইজারাদার মো. আবদুল আলীম ও মো. আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগামী বাজারে পাইকারদের জন্য আমরা কিছুটা সুযোগ দেবো। এতে জনপদে অবিক্রিত হাজার,হাজার গরু বেচা-কেনায় ক্ষুদ্র–মাঝারী খামারী ও কৃষকরা অনায়াসে গরু বিক্রি করতে পারলে স্বস্তি পাবে।

গরু কম বেচা-কেনায় এখানকার গো-খামারীদেও এবার সর্বনাশ হয়েছে!

অন্যদিকে মানিকছড়ি সদর রাজ বাজারের ইজারাদার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাবুল বলেন, গত তিন বাজারেও আমরা হাসিলে অনেক ছাড় দিয়েছি। নির্ধারিত ৩% আদায়ে কঠোরতা দেখাইনি।

করোনার ছোবলে এবার নাভিশ্বাস লোকজন এমনিতে এবার কোরবান দিচ্ছে কম। ফলে গরু মোটাতাজায় জড়িত হাজারো কৃষক, খামারীরা পুঁজিহীন হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। শেষ সময়ে আমাদের(ইজারাদার) একটু আন্তরিকতায় বাজারে ক্রেতা বাড়লে, তাদের প্রাণে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে।

গরু মোটাতাজা ব্যবসায় নতুন পুঁজি বিনিয়োগ করা গিরিকলি এগ্রো ফার্মের মালিক মো. লুৎফর রহমান বলেন, কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় শিক্ষকতার পাশাপাশি মাঝারী একটি খামার প্রতিষ্ঠা করে এই প্রথম তাতে ২০/২৫ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু এখন কোরবানের বাজারের যে হতাশচিত্র দেখছি তাতে চিন্তিত হয়ে পড়ছি!

অন্যদিকে উপজেলার সবচেয়ে ডেইরী ফার্ম একে. এগ্রো ডেইরী ফার্ম মালিক ও উপজেলা ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার ছোবলে ডেইরী খাতে যে পরিমাণ লোকসান হয়েছে, তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব না।

তারপরও মোটাতাজা করা পশুগুলো যদি খরচের মূলেও বেচা হতো তাহলে অন্তত এ পেশা(ব্যবসায়) জড়িতরা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যেতো।

এখন এ ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা সরকারের কাছে ডেইরী ফার্ম বাঁচিয়ে রাখতে সহযোগিতা চাই।

Exit mobile version