মানিকছড়ি থানা পুলিশের বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছে আ’লীগ ও জনপ্রতিনিধিরা

fec-image

মানিকছড়ি থানার বিদায়ী ও নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিদায় ও বরণ উপলক্ষে থানা পুলিশের সৌজন্যে আয়োজিত অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জনপ্রতিনিধি’রা। ফলে অনাড়ম্বর পরিবেশে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে, ২৪ মে থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন এর স্থলে যোগদান করেন নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম। জেলার মাটিরাংগা ও দীঘিনালা থানার সাবেক (ও.সি তদন্ত) এ কর্মকর্তা কর্মস্থলে এসে দায়িত্ব গ্রহণ করার ৪ কর্মদিবসে থানা পুলিমের উদ্যোগে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ২৭ মে রাত সাড়ে ৮টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপজেলার কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা আওয়ামী লীগের কোন নেতা অংশগ্রহন না করায় তাৎক্ষনিকভাবে বিব্রতবোধ করেন নবাগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম।

থানার সাব ইন্সেপেক্টর মোহাম্মদ মাহদীর হোসোইন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ। অতিথি ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিস) সাদিকুর রহমান, ওসি তদন্ত মো. ইলিয়াছ হোসেন।

অতিথির পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন, এএসআই মো. শহীদুল ইসলাম, এসআই মো. নজরুল ইসলাম, এসআই আলী আক্কাছ প্রমুখ।

পরে নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম বক্তব্যে বলেন, আমি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নতুন। এর আগে ওসি তদন্ত হিসেবে মাটিরাঙ্গা ও দীঘিনালায় (৩দিন) নিষ্ঠার সাথে সরকারী দায়িত্ব পালন করেছে। এখানে যোগদান করার পরপর ২টি অপমৃত্যু, ১টি সড়ক দুর্ঘটনা ও অতি সম্প্রতি অপহরণ সংশ্লিষ্ট একটি মামলা অধিকতর গুরুত্ব হওয়ায় বেশি ব্যতিব্যস্ত সময় কাটানোর কারণে এখন পর্যন্ত কারো সাথে সৌজন্য সাক্ষাত কিংবা ফোনেও হায়-হ্যালো করার সময় পাইনি। এইজন্য আমি ব্যক্তিগতভাব দুঃখিত। আশা করছি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতির উন্নতিসহ সকলের সাথে যোগাযোগ এবং আন্তরিকতা তৈরি করা সম্ভব হবে। অহেতুক কেউ আমাকে ভূল না বুঝার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদটি অবশ্যই জনগুরুত্বপূর্ণ এবং এ পদে থেকে একা কোন কাজে সফলতা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক সকল দপ্তর প্রধান, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সাখে সমন্বয় রেখেই জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করতে সকল সহযোগিতা চাই।

বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, এখানকার সাধারণ মানুষ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা পুলিশের জনবান্ধব কাজে সব সময় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। তাই এখানে যে কোন পরিস্থিতিতে কাজ করে সফলতা আনা সম্ভব। আইনের প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। কারো সহযোগিতা ছাড়া একা ওসি’র বা পুলিশের পক্ষে মানবিক পুলিশ হওয়া সম্ভব না।

পরে থানা পুলিশের পক্ষে বিদায়ী ও নবাগত কর্মকর্তাকে ফুল, ক্রেস্ট ও গিফ্ট সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।

এদিকে কেন পুলিশের বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও জনপ্রতিনিধিরা একযোগে বয়কট করলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে না প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক জনপ্রতিনিধি জানান, নবাগত কর্মকর্তা নতুন কর্মস্থলে যোগদানের ৪ দিনের মধ্যেও সে উপজেলা কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্যতা দেখানো প্রয়োজনবোধ করেনি, যা দুঃখজনক। তাই আমরা পুলিশের বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান বর্জন করলাম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন